১২ জনের অভিযোগ আমলে নেওয়ার আদেশ ৮ সেপ্টেম্বর

মুক্তিযুদ্ধের সময় গণহত্যা, হত্যা, ধর্ষণ, অগ্নিসংযোগসহ মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযোগ আমলে নেবেন কি না সে বিষয়ে আগামী ৮ সেপ্টেম্বর দিন নির্ধারণ করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১।
আজ রোববার ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহীমের নেতৃত্বে তিন সদস্যর বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আজ সকালেই প্রসিকিউটর জেয়াদ আল মালুম যশোরের মোহাম্মদ সাখাওয়াত হোসেনসহ (৬১) ১২ জনের বিরুদ্ধে বিরুদ্ধে পাঁচটি আনুষ্ঠানিক অভিযোগপত্র ট্রাইব্যুনালে দাখিল করেন।
এর আগে গত ১৪ জুন তাদের বিরুদ্ধে চূড়ান্ত তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা। পরের দিন অভিযোগের নথি প্রসিকিউশনে জমা দেওয়া হয়।
সাখাওয়াত হোসেন ছাড়া মামলার অপর আসামিরা হলেন মো. বিল্লাল হোসেন (৭৫), মো. আকরাম হোসেন(৫৯), অজিহার মোড়ল ওরফে ওজিয়ার মোড়ল (৬৪), মো. ইব্রাহিম হোসেন (৬০), শেখ মোহাম্মদ মুজিবর রহমান (৬১), মো. আবদুল আজিজ সরদার (৬৫), আ. আজিজ সরদার (৬৬), কাজী ওহিদুল ইসলাম (৬১), মো. লুৎফর মোড়ল (৬৯), আব্দুল খালেক মোড়ল (৬৮), ও মশিয়ার রহমান (৬০)।
এর মধ্যে প্রথম চারজন গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে আছেন। বাকিরা পলাতক রয়েছেন আছে বলে পুলিশের প্রতিবেদনে বলা আছে।
আসামিদের বিরুদ্ধে তদন্ত করে মোট পাঁচটি অভিযোগ আনা হয়েছে। প্রথম অভিযোগে বলা হয়েছে, ১৯৭১ সালে চিংড়া বাজার রাজাকার ক্যাম্পের কমান্ডার সাখাওয়াত হোসেনের নির্দেশে ১০ থেকে ১২ জন রাজাকার কেশবপুর থানার বগা গ্রামে একজন নারী এসএসসি পরীক্ষার্থীকে জোরপূর্বক তাঁর বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে নির্যাতন এবং ধর্ষণ করে।
দ্বিতীয় অভিযোগে বলা হয়, মুক্তিযুদ্ধের সময় কেশবপুর থানার ২ নং সাগরদাঁড়ি ইউনিয়নের আওয়ামী লীগ সভাপতি শহীদ চাদতুল্য গাজীকে সাখাওয়াতসহ ২৫ থেকে ৩০ জন রাজাকার ধরে নিয়ে যায়। এরপর তাঁকে চারদিন আটক রেখে নির্যাতন করে গুলি করে হত্যা করে।
তৃতীয় অভিযোগে বলা হয়, চিংড়া গ্রামের নুর উদ্দিন মোড়লকে ধরে নিয়ে সাখাওয়াতের নির্দেশে নির্যাতন করা হয়।
চতুর্থ অভিযোগ বলা হয়েছে, ১৯৭১ সালে মুক্তিযোদ্ধাদের সোর্স কেশবপুর থানা হিজলডাঙ্গা গ্রামের আবদুল মালেক সরকারকে তাঁর বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে শারীরিক নির্যাতন করে চিংড়া বাজারে গুলি করে হত্যা করে।
শেষ ও পঞ্চম অভিযোগে বলা হয়, ১৯৭১ সালের আশ্বিন মাসের প্রথম দিকে বেলা ১০টা থেকে সাড়ে ১০টার দিকে মুক্তিযোদ্ধা মিরোন শেখকে তাঁর বাড়ি থেকে ১০ থেকে ১২ জন রাজাকার ধরে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। এ সময় তিনি পালাতে চাইলে রাজাকাররা তাঁকে গুলি করে। এতে তার বাঁ হাতে গুলি লাগে। এরপর তাঁকে রাজাকার ক্যাম্পে নিয়ে নির্যাতন করা হয়।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা রাজ্জাক খান বলেন, ২০১২ সালের ১ এপ্রিল এ মামলার তদন্ত কাজ শুরু হয়, গত ১৩ জুন এই মামলার তদন্ত শেষ হয়।
তদন্ত কাজে বিভিন্ন মুক্তিযোদ্ধাসহ ৩২ জন সাক্ষীদের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়েছে।