দপ্তরির কাণ্ড

পঞ্চগড় সদর উপজেলার হাফিজাবাদ ইউনিয়নের পুকুরীডাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দপ্তরির বিরুদ্ধে দুই ছাত্রকে পিটুনি দিয়ে জানালা দিয়ে ফেলে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। গতকাল মঙ্গলবার বিকেলের ওই ঘটনার পর থেকে দপ্তরি জাকির হোসেন (২৮) পলাতক। ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসী বিক্ষোভ মিছিল করে বিদ্যালয়ে তালা লাগিয়ে দিয়েছে।
আহত ছাত্ররা হলো হাফিজাবাদ ইউনিয়নের আমবাড়ী গ্রামের মজিবর রহমানের ছেলে ইমরান হোসেন (১১) ও জসিম উদ্দিনের ছেলে জাহিদ হাসান (১১)। দুজনকে পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
আহত শিক্ষার্থী, স্থানীয় লোকজন ও অভিভাবকরা জানায়, ছিটমহলে শিশু জরিপের কাজে ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা ছিটমহলে ছিলেন। এ সুযোগে বিদ্যালয়ের দপ্তরি মাদকসেবী জাকির হোসেন কয়েকজন ছাত্রীকে অফিস কক্ষে ডেকে মোবাইল ফোনে অশ্লীল ভিডিও দেখাচ্ছিলেন। এ সময় ওই দুই শিক্ষার্থী অফিস কক্ষে এলে জাকির তাদের বের হয়ে যেতে বলেন। সেখানে কী হচ্ছে দেখতে চাইলে তিনি ছাত্রদের গলা ধাক্কা দিয়ে বের করে দিতে যান। শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদ করলে জাকির টেবিলে থাকা একটি ছুরি দিয়ে ইমরানকে জবাই করতে যান। ইমরানকে বাঁচাতে জাহিদ এগিয়ে এলে জাকির তাদের দুজনকে মারপিট শুরু করেন। একপর্যায়ে মারধর করতে করতে জাকির ইমরানকে জানালার ওপর দিয়ে বাইরে ফেলে দেন। এতে ইমরানের ডান হাত ভেঙে যায়। খবর পেয়ে বিক্ষুব্ধ লোকজন ও অভিভাবকরা বিক্ষোভ করে এবং বিদ্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে দেয়। পরে শিক্ষকরা এসে পরিস্থিতি শান্ত করেন।
ওই বিদ্যালয়ের অভিভাবক আশরাফ আলী, হোসেন আলী ও মুসলিম উদ্দিন জানান, মাদকাসক্ত দপ্তরি জাকির হোসেন প্রায়ই ছাত্রীদের ডেকে মোবাইল ফোনে অশ্লীল ছবি দেখান। তাঁর চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য ভালো নয়। তাঁর বিরুদ্ধে মামলার প্রক্রিয়া চলছে বলেও তাঁরা জানিয়েছেন।
বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মো. ফারুক হোসেন বলেন, ‘খবর পেয়ে আমরা তাৎক্ষণিক বিদ্যালয়ে ফিরে আসি। আহত শিক্ষার্থীদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভায় দপ্তরি জাকিরের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
পঞ্চগড় থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মমিনুল ইসলাম বলেন, আহত শিক্ষার্থীদের চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অভিযোগ দায়ের করলে জাকির হোসেনের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।