বেরোবিতে ছাত্র-জনতার ওপর হামলার ঘটনায় ৯ মাস পর মামলা

বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে (বেরোবি) কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় সংঘটিত সহিংস ঘটনার জেরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বিস্ফোরক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে একটি মামলা দায়ের করেছে। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী ও স্থানীয় রাজনৈতিক নেতাকর্মীসহ মোট ৭১ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এ ছাড়া অজ্ঞাতনামা ৮০ থেকে ১০০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
বুধবার (৭ মে) বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ড. মো. হারুন অর রশীদ বাদী হয়ে রংপুরের তাজহাট থানায় মামলাটি দায়ের করেন। মামলায় পেনাল কোডের ১৪৩, ১৪৭, ৩২৩, ৩২৪, ৩২৬, ৩০৭, ১১৪ ও ৩৪ ধারা এবং বিস্ফোরক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের ৩-ক ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে।
মামলার প্রধান আসামিদের মধ্যে রয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩৬ জন শিক্ষার্থী, ২ জন শিক্ষক, ১৩ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং স্থানীয় ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। মামলার পরপরই বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেসপাস শাখার সহকারী রেজিস্ট্রার মোকতারুল ইসলামকে (৪০) পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তাজহাট থানার উপপরিদরশক (এসআই) মোসাদ্দেক।
মামলার এজাহারে নাম উল্লেখ করা আসামিদের মধ্যে রয়েছেন—বেরোবি ছাত্রলীগের সভাপতি পোমেল বড়ুয়া, সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুর রহমান শামিম, যুগ্ম সম্পাদক মাসুদুল হাসান, সাংগঠনিক সম্পাদক ধনঞ্জয় কুমার দাস টগর, দপ্তর সম্পাদক বাবুল হোসেন, সহসভাপতি গ্লোরিয়াস ফজলে বারী, আখতার হোসেন, শাহীন ইসলাম, সাখাওয়াত হোসেন, প্রচার সম্পাদক সাব্বির হোসেন রিয়ান ও সাহিত্য সম্পাদক মৃত্যুঞ্জয় রায়।
আসামিদের মধ্যে আরও আছেন গণিত বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. মশিউর রহমান ও লোক প্রশাসন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. আসাদুজ্জামান মণ্ডল। কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে উপরেজিস্ট্রার তৌহিদুল ইসলাম জনি, সহকারী রেজিস্ট্রার হাফিজুন রহমান তুষার, মনিরুজ্জামান পলাশ, আশিকুন্নাহার টুকটুকি, মোছা. মাহবুবা আক্তার, রাফিউল হাসান রাসেল, আমির হোসেন, নূরনবী, মো. নূর আলম, মাহবুবার বহমান (বাবু), মো. আপেল ও আবুল কালাম আজাদকে আসামি করা হয়েছে।
মামলায় স্থানীয় রাজনীতিকদেরও অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। তাদের মধ্যে রয়েছেন তাজহাট থানা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জিকরুল মাহবুব শোভন, যুবলীগ নেতা শামিম হাসান হিটন, শাহারিয়ার নয়ন, আহসান হাবিব লালন, আল আমিন ও ছাত্রলীগ কর্মী সায়ির বিন আশরাফ আনন্দ।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রহমত আলী বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এখন আমাদের প্রত্যাশা, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দ্রুত পদক্ষেপ নিয়ে দোষীদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনবে।’
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ড. হারুন অর রশীদ বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা বোর্ডের সিদ্ধান্ত ও উপাচার্যের অনুমোদন অনুযায়ী এ মামলা করা হয়েছে। আরও অনেক হামলাকারী জড়িত ছিল, যাদের শনাক্ত করতে ভিডিও ফুটেজ ও ছবি বিশ্লেষণ করা হবে।’