অপ্রস্তুত হয়ে দায়িত্ব নিলে দেশের ধ্বংস অনিবার্য : ড. মঈন খান

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান বলেছেন, আমরা সবাই বাংলাদেশের মঙ্গল চাই। আমি ছাত্রসমাজকে সম্মান জানাই। তার মানে এই নয়, কেউ যদি পথভ্রষ্ট হয়ে যায় আমি তাদের চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দেব না? ছাত্রদের মূল দায়িত্ব লেখাপড়া। লেখাপড়া শিখে তাদেরকে এই দেশের ভবিষ্যতে দায়িত্বভার গ্রহণ করতে হবে। অপ্রস্তুত হয়ে, যোগ্যতা না গ্রহণ করে তারা যদি এই দেশের দায়িত্বে যায় তাহলে দেশের ধ্বংস অনিবার্য।
আজ বুধবার (২১ মে) জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘বহুদলীয় গণতন্ত্র ও সংবাদপত্রের স্বাধীনতায় শহীদ জিয়া’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে ড. মঈন খান এসব কথা বলেন।
ড. মঈন খান বলেন, বিএনপি স্বৈরতন্ত্র করেছে একটি উদাহরণ কেউ দেখাতে পারবে না। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া দুইবার প্রধানমন্ত্রীর পদে শপথ নিয়েছেন একবার পল্টনে জনগণের সামনে প্রধানমন্ত্রীর পদ রাজপথে ছুড়ে ফেলে দিয়েছেন। তিনি প্রধানমন্ত্রীত্ব গ্রহণ করেনি, তিনি বাংলাদেশের মানুষকে ভালোবাসেন, মানুষের জন্য তিনি রাজনীতি করেন এবং পরিবর্তীতে তিনি আবার প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন। এখানেই আওয়ামী লীগের সঙ্গে বিএনপির প্রভেদ। বুঝতে হবে, যারা মিসইনফরমেশন, ডিসইনফরমেশন, প্রোপাগান্ডা প্রচার করে কুৎসা রটাচ্ছেন তার শক্ত জবাব দিতে হবে।
ড. মঈন খান বলেন, বিএনপির কি আওয়ামী লীগের প্রধানের বিরুদ্ধে ৩৫টি মামলা দিয়েছে? বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগ ৩৫টি মামলা দিয়েছে। বিএনপি কি আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদকের বিরুদ্ধে ১০১টি মামলা দিয়েছে? আওয়ামী লীগ তো মহাসচিবের (মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর) বিরুদ্ধে মামলা দিয়েছে। বিএনপি কি আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে এক লাখ মামলা দিয়েছে? ৫০ লাখ নেতাকর্মীকে আসামি করেছে? আওয়ামী লীগ তো এক লাখ মামলায় ৫০ লাখ বিএনপি নেতাকর্মীকে আসামি করেছে। তাহলে আজকে যারা বলছে বিএনপি আর আওয়ামী লীগ নাকি এক। বিএনপি এলে আবার নাকি বাংলাদেশে স্বৈরাচার ঘুরে দাঁড়াবে। এসব মিথ্যা প্রচারণা হচ্ছে, তথ্য দিয়ে সময়োচিত জবাব দিতে হবে। তাদের কথাকে মিথ্যা প্রমাণিত করে দিতে হবে।
ড. আব্দুল মঈন খান বলেন, তোমাদের আন্দোলন তো কোটা বাতিল করে চাকুরি জন্য। মনে করিয়ে দিতে হবে। বাংলাদেশের গণমানুষের দাবির মুখে তোমরা এক দফা আন্দোলনে যেতে বাধ্য হয়েছো। এটা গণমানুষের দাবি ছিল। কারণ তারা বুঝতে পেরেছে কোটা আন্দোলনে কাজ হবে না। এ দেশের পরিবর্তন আনতে হলে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে হবে। একদফা দাবি স্বৈরাচারকে বিদায় করতে হবে, তখন তারা সফল হয়েছে। এই সত্য তাদের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিতে হবে।
বিএনপির এই শীর্ষ নেতা বলেন, বাংলাদেশে এখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, বাংলাদেশের স্বার্থে আজকে আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। বাংলাদেশের কল্যাণে আমাদের এক হয়ে কাজ করতে হবে। আমি কিন্তু বাকশালের কথা বলছি না, ইউনিটির ডাইভারসিটি থাকবে।
জিয়াউর রহমানের কর্মময় জীবন তুলে ধরে মঈন খান বলেন, শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান এই জাতীয় প্রেসক্লাব তৈরি করেছিলেন। যেটিকে সংবাদপত্রের স্বাধীনতার স্তম্ভ বলা হয়। স্বাধীন গণমাধ্যমের প্রবর্তক ছিলেন তিনি। সংবাদপত্রের স্বাধীনতা না থাকলে সে দেশ গণতান্ত্রিক হতে পারে না। আমরা সংবাদপত্রের স্বাধীনতায় বিশ্বাসী। আপনারা দেখছেন, ১৬ বছর সংবাদপত্রের কী অবস্থা করেছিল আওয়ামী লীগ। বাংলদেশে যে পরিবর্তন এসেছে, সে পরিবর্তনের মূল লক্ষ্য হতে হবে সংবাদপত্র। এটি না পারলে সব ব্যর্থ হবে।
‘সংস্কার, নির্বাচন, গণতন্ত্র- এগুলো কোনোটাই মিউচ্যুয়ালি এক্সক্লুসিভ নয়, স্টাটিক্স এর ভাষায় এরা পাশাপাশি থাকে, কেউ আগে কেউ পরে’, মন্তব্য করেন তিনি।
আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মধ্যে প্রভেদ দেখিয়ে দিয়ে ড. মঈন খান বলেন, শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান একজন সৈনিক হয়ে বহুদলীয় গণতন্ত্র, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ফিরিয়ে দিয়েছেন। আর আওয়ামী লীগ শব্দটাই উর্দু, যার অর্থ হলো জনগণের দল। জনগণের দল হয়েও আওয়ামী লীগ কী করেছে? তারা গণতন্ত্র থেকে স্বৈরতন্ত্রে গিয়েছে। এটাই আওয়ামী লীগের সঙ্গে বিএনপির প্রভেদ।
আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু।