সরকারি চাকরি অধ্যাদেশ বাতিলে স্মারকলিপি দেবে কর্মচারী ঐক্য ফোরাম
সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ ২০২৫ বাতিলের দাবি আদায়ে আগামী রোববার ও সোমবার দুইজন উপদেষ্টার কাছে স্মারকলিপি দেবে বাংলাদেশ সচিবালয় কর্মচারী ঐক্য ফোরাম। একইসঙ্গে আপাতত কর্মবিরতি আর পালন করবেন না ফোরাম।
বৃহস্পতিবার (২৯ মে) দুপুরে সচিবালয়ে কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারে এক ঘণ্টা কর্মবিরতি শেষে বাংলাদেশ সচিবালয় কর্মচারী ঐক্য ফোরামের কো-চেয়ারম্যান মো. নুরুল ইসলাম এ কর্মসূচির কথা জানান।
মো. নুরুল ইসলাম বলেন, আলোচনা যাই হোক আমাদের একটা টাইম ফ্রেম থাকতে হবে। আমরা তো আজীবন অপেক্ষায় থাকবো না। ঈদের আগে আমাদের হাতে সময় আছে চার দিন। প্রধান উপদেষ্টা মহোদয়ের আগামী শনিবার দেশে আসার কথা শুনেছি। সেক্ষেত্রে রোববার আমাদের আশাব্যঞ্জক একটি খবর পাওয়ার কথা। তারপরও আমরা আন্দোলন থেকে সরে যাইনি, সরে যাব না।
নুরুল ইসলাম বলেন, অধ্যাদেশ বাস্তবায়ন করতে পারলে এরপরে অভিন্ন নীতিমালা আমাদের ওপর চাপিয়ে দেওয়া হবে। আশা করি মন্ত্রিপরিষদ সচিব, জনপ্রশাসন সচিবসহ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য সচিবরা প্রধান উপদেষ্টা দেশে ফেরার পর তার সঙ্গে আলোচনা করে আমাদের একটি ভালো রেজাল্ট দিবেন, আমরা সেই প্রত্যাশায় থাকবো।
নুরুল ইসলাম বলেন, চাকরি অধ্যাদেশ বাতিলের দাবিতে আগামী রোববার উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার, উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান ও উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানের কাছে স্মারকলিপি দেওয়া হবে। সোমবার স্মারকলিপি দেওয়া হবে উপদেষ্টা মাহফুজ আলম ও উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার কাছে। এছাড়া, মাঠ পর্যায়ে থেকে প্রতিষ্ঠান ও সংস্থা প্রধানদের মাধ্যমে মন্ত্রিপরিষদ সচিবের কাছে স্মারকলিপি দেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।
ঐক্য ফোরামের কো-চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম আরও বলেন, আগামী রোববার ইতিবাচক খবর পেলে আমরা সব কর্মসূচি প্রত্যাহার করে নেব। একটা ভালো ফলাফল নিয়ে ঈদটা উদযাপন করব।
গত বৃহস্পতিবার (২২ মে) সরকারি চাকরি অধ্যাদেশ-২০২৫ এর খসড়ায় চূড়ান্ত অনুমোদন দেয় উপদেষ্টা পরিষদ। ওইদিন থেকে সচিবালয়ে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেন সরকারি কর্মচারীরা।
২০১৮ সালের সরকারি চাকরি আইন সংশোধন করে অধ্যাদেশ আকারে প্রণয়ন করা হয়। অধ্যাদেশটিতে চার ধরনের শৃঙ্খলা ভঙ্গের অপরাধের জন্য বিভাগীয় মামলা ছাড়াই শুধুমাত্র কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়ে চাকরিচ্যুতের বিধান রাখা হয়েছে। সেখানে সরকারি কর্মচারীদের আচরণ ও দণ্ড সংক্রান্ত বিশেষ বিধান শিরোনামে একটি ধারা যুক্ত করা হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, সরকারি কোনো কর্মচারী যদি এমন কোনো কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হোন, যার কারণে অন্য যেকোনো সরকারি কর্মচারীর মধ্যে আনুগত্য সৃষ্টি করে বা শৃঙ্খলা বিঘ্নিত করে বা কর্তব্য সম্পাদনে বাধার সৃষ্টি করে অন্যান্য কর্মচারীদের সঙ্গে সমবেতভাবে বা এককভাবে ছুটি ছাড়া বা কোনো যুক্তিসংগত কারণ ছাড়া নিজ কর্মে অনুপস্থিত থাকেন বা বিরত থাকেন বা কর্তব্য সম্পাদনে ব্যর্থ হোন, অন্য যে কোনো কর্মচারীকে তার কর্ম থেকে অনুপস্থিত থাকতে বা বিরত থাকতে বা তার কর্তব্য পালন না করার জন্য উসকানি দেন বা প্ররোচিত করেন, যে কোনো সরকারি কর্মচারীকে তার কর্মে উপস্থিত হতে বা কর্তব্য সম্পাদনে বাধাগ্রস্ত করেন তাহলে তিনি অসদাচরণের দায়ে দণ্ডিত হবেন। আর এ নিয়েই ক্ষুব্ধ সরকারি কর্মকর্তা কর্মচারীরা।