শ্রমিকদের বকেয়া পরিশোধে গার্মেন্টস মালিক থানা হেফাজতে

সাভারের হেমায়েতপুরে অবস্থিত বসুন্ধরা গার্মেন্টসের শ্রমিকদের বকেয়া পরিশোধ নিশ্চিত করতে মালিককে থানায় নিয়ে এসেছে পুলিশ। মালিক মোহাম্মদ শহিদুল্লাহ (৬৮)। তিনি এই কারখানার ব্যবস্থাপনা পরিচালক।
গত বৃহস্পতিবার (২৯ মে) রাতে শ্রমিকদের আন্দোলনের কারণে পুলিশ তাঁকে রাজধানীর বনানীর বাসা থেকে ডেকে থানায় নিয়ে যায়। গতকাল শুক্রবার (৩০ মে) সন্ধ্যা পর্যন্ত তিনি থানায় ছিলেন। তবে শ্রমিকদের পাওনা মেটানোর কোনো স্পষ্ট প্রতিশ্রুতি দিতে পারেননি তিনি।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন শিল্প পুলিশ-১ এর পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোমিনুল ইসলাম।
বসুন্ধরা গার্মেন্টসে কাজ করেন প্রায় ৮৫০ শ্রমিক। তারা গত দুই মাস ধরে বারবার লে-অফ ঘোষণায় ভুগছেন। এপ্রিল মাসের বেতন ২৫ মে পরিশোধের কথা থাকলেও মালিকপক্ষ কথা রাখেনি। এরপর ২৯ মে বেতন দেওয়ার নতুন তারিখ দিলেও কেউ টাকা পাননি।
শ্রমিকরা ক্ষুব্ধ হয়ে সড়ক অবরোধ করেন। এ ঘটনায় উত্তেজনা ছড়ায় আশপাশের এলাকাতেও। পুলিশ সতর্ক অবস্থান নেয় যেন অসন্তোষ অন্য কারখানায় ছড়িয়ে না পড়ে।
পুলিশ জানায়, মালিকপক্ষ ১ ও ৪ জুনের মধ্যে প্রয়োজনে কারখানার মালামাল বিক্রি করে বকেয়া পরিশোধের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। তাই মালিককে ফেরার সুযোগ দেওয়া হচ্ছে।
শ্রমিক আব্দুস সালাম বলেন, আমরা এখনও এপ্রিল মাসের বেতন পাইনি। ঈদ সামনে, সংসার চলবে কীভাবে? এপ্রিল মাসের বেতন, চলতি মাসের অর্ধেক বেতন ও ঈদ বোনাস না দেওয়া পর্যন্ত মালিককে পুলিশ হেফাজতে রাখার দাবি তুলেছেন তারা।
আরেক শ্রমিক জানান, কারখানা চালাতে না পারলে আমাদের পাওনা পরিশোধ করে দিন।
জাতীয় গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশনের সাভার থানা কমিটির সাধারণ সম্পাদক কবির হোসেন বলেন, ঈদের আগে বেতন-বোনাস না দিলে শ্রমিকরা কীভাবে চলবে? সব বকেয়া দ্রুত পরিশোধ করতে হবে।
এ বিষয়ে মালিক শহিদুল্লাহ বলেন, শ্রমিক অসন্তোষ ও শিপমেন্ট বিলম্বের কারণে ব্যাংকের দেনা বেড়েছে। নতুন ক্রয় আদেশও আসছে না, তাই কাজ দেওয়া যাচ্ছে না।
শিল্প পুলিশের এসআই আসাদুজ্জামান জানান, মালিক, শ্রমিক ও পুলিশ মিলে বারবার বৈঠক হচ্ছে। শ্রমিকরা মালিকের ওপর নজরদারি রাখছেন। তারা জানিয়েছে, বেতন না দেওয়া পর্যন্ত পালাক্রমে মালিককে নজরে রাখবে।