দ্রুত নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করুন : আসাদুজ্জামান রিপন

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার উদ্দেশে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ড. আসাদুজ্জামান রিপন বলেছেন, ‘সংস্কারের কথা বলে আর কালক্ষেপণ করবেন না। দ্রুত আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করুন। আগামীকাল (সোমবার) বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপির সঙ্গে আপনার সংলাপ অনুষ্ঠিত হবে। আশা করি, এই সংলাপের পর আপনি নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করবেন।’
আজ রোববার (১ জুন) গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলা ও পৌর বিএনপির দ্বি-বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন আসাদুজ্জমান রিপন।
‘গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত কোনো প্রধানমন্ত্রী দেশ ছেড়ে পালিয়ে যায় না’ বলে মন্তব্য করে ড. আসাদুজ্জামান রিপন বলেন, ‘গণতন্ত্র মনে থাকতে হবে, গণতন্ত্র জাতীয় জীবনেও থাকতে হবে। গণতন্ত্র থাকলে পালাতে হয় না। যে শাসক গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত হন, জনগণকে যারা বিশ্বাস করে, জনগণকে যারা তোয়াক্কা করে, জনগণ তাদের সম্পদ হয়ে যায়, তাদের পালাতে হয় না। যেমন আমার নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া পালাননি। ১/১১ এর সময় তার ওপর চাপ ছিল। তাকে দেশ ছেড়ে চলে যেতে বলা হয়েছিল। কিন্তু তিনি দেশ ছেড়ে চলে যাননি।’
বিএনপির এই নেতা আরও বলেন, ‘শেখ হাসিনা মানুষের ভোটাধিকারে বিশ্বাস করতেন না। দেশে সুষ্ঠ ভোট হলে তিনি গোপালগঞ্জ-৩ (কোটালীপাড়া-টুঙ্গিপাড়া) আসন থেকে হয়তো নির্বাচিত হতে পারতেন না। আমি তাকে চ্যালেঞ্জ দিয়ে বলেছিলাম, আপনি কোটালীপাড়া ও টুঙ্গিপাড়পায় কত পার্সেন্ট ভোট পেয়েছেন, ভোটের সেই মুড়িগুলো দেখান। যদি দেখাতে পারেন তাহলে আমি রাজনীতি ছেড়ে আপনার গোলামি করব। আর যদি না দেখাতে পারেন তাহলে আপনি প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে সরে গিয়ে আমাদের দেশকে বাঁচান। তিনি আমার চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করেননি।’
ড. আসাদুজ্জামান রিপন বলেন, ‘শেখ হাসিনা দেশের বৈধ প্রধানমন্ত্রী ছিলেন না। কোটালীপাড়া-টুঙ্গিপাড়া এলাকায় ওনার যারা চামচা ছিলেন, যারা নেতাকর্মী ছিলেন তারা ভোটের বাক্স ভরে দিয়েছেন। এটা কি নির্বাচন হলো? এটা কি গণতন্ত্র হলো? বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি গণতন্ত্রে বিশ্বাসী। তাই আজকের এই সম্মেলনে সব নেতাদের মতামতের ভিত্তিতে আমরা সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত করতে চাই।’
সম্মেলনে প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এস এম জিলানী। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি ইতোমধ্যে রাষ্ট্র সংস্কার ও মেরামতের জন্য ৩১ দফা পেশ করেছে। আপনারা সবাই এই ৩১ দফা সম্পর্কে ধারণা রাখবেন। এই ৩১ দফাই হচ্ছে বাংলাদেশের মানুষের মুক্তির সনদ।’
কোটালীপাড়া উপজেলার বিএনপির আহ্বায়ক এস এম মহিউদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সম্মেলনের আলোচনা সভায় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ, সহসাংগঠনিক সম্পাদক খন্দকার মাশুকুর রহমান, সেলিমুজ্জামান সেলিম, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক শরীফ রফিকুজ্জামান, কোটালীপাড়া উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব আবুল বাশার হাওলাদার, যুগ্ম আহ্বায়ক ফায়েকুজ্জামান, পৌর বিএনপির আহ্বায়ক ইউসুফ আলী দাড়িয়া, সদস্য সচিব ওলিউর রহমান হাওলাদারসহ স্থানীয় বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের সিনিয়র নেতারা বক্তব্য দেন।
সম্মেলনে বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ বলেন, ‘সুষ্ঠ নির্বাচন না হওয়া পর্যন্ত দেশের কোনো সমস্যার সমাধান হবে না। সেই কারণে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলসহ ৫০টিরও অধিক রাজনৈতিক দল আজকে ভোটাধিকার চায়, নির্বাচন চায়। নির্বাচনের একটিন সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ ঘোষণা চায়। কারণ সংস্কারের কথা যদি বলেন, তাহলে বলব—বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপিই প্রথম সংস্কারের কথা বলেছিল, কেননা শেখ হাসিনার আমলে যখন মানুষকে গুম কর হচ্ছিল, খুন করা হচ্ছিল তখন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান দেশ সংস্কারের জন্য ২৭ দফা ঘোষণা করেছিলেন। আজ সেই ২৭ দফাই ৩১ দফায় পরিণত হয়েছে।’