সচিবালয়ে বিক্ষোভ, ঈদের পরে কর্মসূচির ঘোষণা আন্দোলনকারীদের

সচিবালয়ের বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের কর্মচারীরা আজও আন্দোলনে নেমেছেন। তারা ‘সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’-কে ‘কালো আইন’আখ্যায়িত করে এটি বাতিল না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।
আন্দোলনকারী কর্মচারীরা আজ মঙ্গলবার (৩ জুন) সকাল ১১টার দিকে সচিবালয়ের বাদামতলায় বিক্ষোভ সমাবেশ করেন। সমাবেশে আন্দোলনকারী কর্মচারীদের সংগঠন বাংলাদেশ সচিবালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী ঐক্য ফোরামের নেতারা বক্তব্য দেন।
এসময় ঐক্য ফোরামের কো-চেয়ারম্যান মুহাম্মদ নুরুল ইসলাম সরকার বলেন, ‘আপনারা যদি ভেবে থাকেন আন্দোলন থেমে গেছে, তাহলে বোকার স্বর্গে বাস করছেন। আমরা এমন কর্মসূচি দেব, আপনারা কল্পনা করতে পারবেন না। ঈদ সামনে তাই আগামীকাল কর্মসূচি রাখিনি। যদি এই আইন বাতিল না করা হয়, তাহলে প্রয়োজনে শুধু কর্মবিরতি নয়, অবস্থান কর্মসূচিও দিতে পারি। দরকার হলে সারা দেশে ডিসি অফিস, বিভাগীয়সহ সমগ্র বাংলাদেশে এই কর্মসূচি ছড়িয়ে দেব। ১৫ জুনের মধ্যে ভালো সংবাদ না পেলে নেতারা বসে কঠোর কর্মসূচি দেবেন।’
আন্দোলনকারীদের আজ (মঙ্গলবার) অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ ও আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বরাবর স্মারকলিপি দেওয়ার কথা ছিল।
ঐক্য ফোরামের আরেক কো-চেয়ারম্যান বাদীউল কবীর বলেন, আগামীকাল বুধবার যেহেতু অনেকেই বাড়ি যাবেন, সে কারণে আগামীকাল কোনো কর্মসূচি থাকবে না। ঈদের পর প্রথম কর্মদিবসেও কর্মসূচি থাকবে না। ১৬ জুন আপনারা সবাই প্রস্তুতি নিয়ে আসবেন। কেউ যেন কর্মস্থলে না থাকেন, সবাই বেলা ১১টায় এখানে (সচিবালয়ের বাদামতলা) একত্র হয়ে উচ্চারণ করব, ‘অবৈধ কালো আইন বাতিল কর, করতে হবে। মানি না মানব না।’
সরকারের নীতিনির্ধারকদের উদ্দেশে বাদীউল কবীর বলেন, ‘এই অধ্যাদেশ যত দিন ছিল না তাতে কর্মপরিবেশের কী ক্ষতি হয়েছে? আর এটি প্রবর্তন হওয়ার ফলে কী লাভ হয়েছে? এই আইন করার ফলে সবার কণ্ঠ রোধ করা হয়েছে।’
ঐক্য ফোরামের কো-মহাসচিব নজরুল ইসলামসহ আরও কয়েকজন নেতা সমাবেশে বক্তব্য দেন। বক্তব্যের পর কর্মচারীরা বিক্ষোভ করে মন্ত্রিপরিষদ ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের নতুন ভবনের নিচে অবস্থান নেন।
‘সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’বাতিলের দাবিতে ১০ দিনের বেশি সময় ধরে আন্দোলন করছেন সচিবালয়ে কর্মরত বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের কর্মচারীরা। আন্দোলন চলার মধ্যেই অধ্যাদেশটি জারি করে সরকার। এর পর থেকে বিক্ষোভ, কর্মবিরতি ও স্মারকলিপি দেওয়ার মতো কর্মসূচি পালন করছেন আন্দোলনকারী কর্মচারীরা।
অধ্যাদেশটি বাতিলের দাবি জানিয়ে গত দুই দিনে সরকারের পাঁচজন উপদেষ্টার বরাবর স্মারকলিপি দেন কর্মচারীরা। আজও আইন ও অর্থ উপদেষ্টার কাছে স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছে।