‘সম্বল’ যেন রনি মিয়ার আত্মার আত্মীয়

অপরিচিত কেউ বাড়িতে এলেই কেঁদে ফেলে ‘সম্বল’। হয়তো ভাবে, এবার হয়তো তাকে তুলে দেওয়া হবে ক্রেতার হাতে। নাটোরের লালপুর উপজেলার গোপালপুর স্টেডিয়ামপাড়ার রনি মিয়ার খামারে বেড়ে ওঠা এই সম্বল যেন হয়ে উঠেছে পরিবারেরই একজন, আত্মার আত্মীয়।
চার বছর ধরে সন্তানের মতো লালন–পালন করা সম্বলের ওজন এখন ২০ মণের বেশি। শুধু বড় দেহই নয়, তার আচরণেও যেন ফুটে ওঠে মানুষের মতো আবেগ। বসতে বললে বসে, দাঁড়াতে বললে দাঁড়ায়, দাঁত দেখাতে বললে দাঁতও দেখায়। মালিকের গালে চুমুও দেয় আদরে।
আসন্ন ঈদুল আজহাকে কেন্দ্র করে রনি মিয়া তার সম্বলের দাম হাঁকছেন সাড়ে পাঁচ লাখ টাকা।
সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, সম্বলকে দেখতে এসেছেন কয়েকজন ক্রেতা। তবে সে যেন কারও দিকে তেমন নজর দেয় না—কেবল পরিচিত মুখগুলোর দিকেই তার টান। মালিক রনির ডাকে সাড়া দিয়ে সে এগিয়ে আসে, চুমু দেয় গালে। একপাশে বসে থাকা রনির মা গরুটির পিঠে হাত বুলিয়ে আদর করছেন, চোখে-মুখে যেন মায়া ঝরছে।
কথা হয় রনি মিয়া সঙ্গে। তিনি বলেন, নিজ খামারের বাছুর ছিল। চার বছর ধরে সন্তানের মতো লালন-পালন করেছি। আমার মা যেমন আমাকে আদর করেন, তেমনি সম্বলকেও আদর করেন। তার সঙ্গে একটা আত্মার সম্পর্ক সৃষ্টি হয়েছে।
রনি মিয়া আরও বলেন, সম্বলকে যা বলি, তাই শোনে। দাঁড়াতে বললে দাঁড়ায়। দাঁত দেখাতে বললে দাঁত দেখায়, আবার কাছে এলে চুমুও দেয়। ওকে ছেড়ে দেওয়া খুব কষ্টের।
রনি মিয়া আরও বলেন, এবার গরুর বাজার ভালো যাচ্ছে না। দামও তেমন পাচ্ছি না। সাড়ে পাঁচ লাখ টাকা দাম চাচ্ছি, কিন্তু তাতেও খরচ উঠবে না। গো-খাদ্যের দাম অনেক বেড়েছে। চার বছর ধরে অনেক খরচ করেছি।
এ বিষয়ে লালপুর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ বলেন, এ বছর কোরবানির জন্য প্রস্তুত গরুগুলোর মধ্যে এটিই সবচেয়ে বড়। আমরা খামারি রনি মিয়াকে সার্বক্ষণিক পরামর্শ ও সহায়তা দিয়েছি।