ব্যবসায়ী রাকিবের মরদেহ ঢাকায় আসবে শুক্রবার, দাফন শনিবার

টিম গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও বাংলাদেশ তৈরি পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সাবেক সিনিয়র সহসভাপতি আবদুল্লাহ হিল রাকিবের জানাজাসহ দাফন সংক্রান্ত আনুষ্ঠানিকতার সম্ভাব্য সময়সূচি নির্ধারিত হয়েছে। আগামী শুক্রবার (১৩ জুন) রাত ৯টা ৩০ মিনিটের দিকে তার মরদেহ হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণের কথা রয়েছে। পরদিন শনিবার বনানী বা পুরান ডিওএইচএস মসজিদে জানাজা শেষে তাকে বনানী কবরস্থানে দাফন করা হবে। পরিবার ও বিজিএমইএ সূত্রে এ খবর জানা যায়।
আবদুল্লাহ হিল রাকিবের প্রথম জানাজা হবে আগামীকাল বুধবার (১১ জুন) স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৭টায় কানাডার টরন্টো শহরের ড্যানফোর্থ এলাকার সুন্নাতে জামাত মসজিদে। পরদিন বৃহস্পতিবার মরদেহ ঢাকার উদ্দেশে কানাডা থেকে রওনা হবে। শুক্রবার (১৩ জুন) রাত ৯টা ৩০ মিনিটে আবদুল্লাহ হিল রাকিবের মরদেহ হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণের কথা রয়েছে। পরে মরদেহ সরাসরি নেওয়া হবে বনানী বা পুরান ডিওএইচএস এলাকার বাসভবনে। পরেরদিন শনিবার সকালে বিজিএমইএ ভবনে রাকিবের আরেকটি জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। পরে বনানী বা পুরান ডিওএইচএস মসজিদে আরও একটি জানাজা শেষে তাকে বনানী কবরস্থানে দাফন করা হবে।
আব্দুল্লাহ হিল রাকিবের মৃত্যুতে সহকর্মী, বন্ধু ও শুভানুধ্যায়ী মহলে শোকের ছায়া বিরাজ করছে। গতকাল সোমবার শোকবার্তায় বিজিএমইএর প্রশাসক আনোয়ার হোসেন ও নবনির্বাচিত সভাপতি মাহমুদ হাসান খান বাবু বলেন, আবদুল্লাহ হিল রাকিব ছিলেন একজন গতিশীল উদ্যোক্তা ও নিবেদিতপ্রাণ নেতা, যিনি বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্পের উন্নয়নে অসামান্য অবদান রেখেছেন। তার শূন্যতা তৈরি পোশাক শিল্পে গভীরভাবে অনুভূত হবে।
গত রোববার (৮ জুন) স্থানীয় সময় বিকেল ৩টার দিকে কানাডার অন্টারিও প্রদেশের স্টারজিওন লেকে ঘটনাটি ঘটে। আবদুল্লাহ হিল রাকিব একটি ক্যানো নৌকায় ছিলেন। এসময় ছিলেন তার বন্ধু বাংলাদেশ বিমানের বোয়িং ৭৮৭ বিমানের ক্যাপ্টেন সাইফুজ জামান গুদ্দু ও তার ছেলে। নৌকাটি উল্টে গেলে রাকিবের ছেলে সাঁতরে তীরে উঠতে সক্ষম হলেও রাকিব ও তার বন্ধু প্রাণ হারান।
আবদুল্লাহ হিল রাকিব ১৯৭১ সালের ২৬ আগস্ট জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগ থেকে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন। কর্মজীবন শুরু করেন একটি বহুজাতিক ক্রয় প্রতিষ্ঠানে। পরে ২০০৯ সালে তিনটি গার্মেন্টস ও টেক্সটাইল কারখানা নিয়ে টিম গ্রুপ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে তিনি উদ্যোক্তা হিসেবে যাত্রা শুরু করেন। তার নেতৃত্বে টিম গ্রুপ পরিণত হয় বাংলাদেশের অন্যতম বৃহৎ পোশাক শিল্প গ্রুপে, যার অধীনে রয়েছে ছয়টি পোশাক ও ব্যাকওয়ার্ড লিংকেজ কারখানা– ব্রাদার্স ফ্যাশন লিমিটেড, ৪এ ইয়ার্ন ডাইং লিমিটেড, গ্রামটেক লিমিটেড, সাউথ এন্ড সোয়েটারস, মার্স স্টিচ লিমিটেড ও সি. বি. এম. লিমিটেড। টেকসই ও দায়িত্বশীল ব্যবসায়িক চর্চায় টিম গ্রুপের পথিকৃৎ ভূমিকার পেছনে রাকিবের নেতৃত্ব গুরুত্বপূর্ণ। তার দিকনির্দেশনায় গ্রুপটি দেশের পোশাক শিল্পে সবুজ বিপ্লবের অন্যতম অগ্রপথিক হয়ে ওঠে। গার্মেন্টস খাতের বাইরে টিম গ্রুপ ওষুধ, রিয়েল এস্টেট, তথ্যপ্রযুক্তি ও খুচরা ব্যবসা সম্প্রসারিত হয়েছে এবং বর্তমানে ৩০ হাজারের বেশি কর্মী এই গ্রুপে কর্মরত রয়েছেন।