সিলেটের জাফলং, বিছানাকান্দিসহ পাঁচটি পাথর কোয়ারিতে আর লিজ দেওয়া হবে না এবং পাথর উত্তোলনের কোনো সম্ভাবনাও নেই- এমন ঘোষণা দিয়েছেন পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান এবং বিদ্যুৎ ও জ্বালানি উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান।

আজ শনিবার (১৪ জুন) দুপুরে জাফলংয়ের প্রতিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকা পরিদর্শনে এসে এসব তথ্য জানান তারা। তবে পরিদর্শনকালে স্থানীয়দের তীব্র বিক্ষোভের মুখে পড়তে হয় উপদেষ্টাদের।

জাফলং বাজার এলাকায় দুই উপদেষ্টার গাড়িবহর আটকে ‘ভুয়া ভুয়া’ স্লোগান দিতে থাকেন বিক্ষোভকারীরা। কেউ কেউ রাস্তায় শুয়ে পড়ে বিক্ষোভ জানান। পরে পুলিশ এসে তাদের সরিয়ে দিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

বিক্ষোভকারীরা জানান, সীমান্তবর্তী এই এলাকায় কৃষি ও বিকল্প কোনো কর্মসংস্থান না থাকায় পাথর উত্তোলনই তাদের একমাত্র জীবিকা। দীর্ঘদিন কোয়ারি বন্ধ থাকায় পরিবার-পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন তারা।

স্থানীয় ব্যবসায়ীরাও জানান, রাতে অবৈধভাবে পাথর লুট হলেও বৈধভাবে ব্যবসা করার সুযোগ পাচ্ছেন না। এতে বিপাকে পড়েছেন পাথর পরিবহন ও সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা।

গোয়াইনঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সরকার মোহাম্মদ তোফায়েল আহমেদ জানান, হঠাৎ করেই স্থানীয়রা উপদেষ্টাদের গাড়ি আটকে দেয়। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে।

পরিদর্শন শেষে নিজের অবস্থানে অনড় থেকে পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘জাফলং একটি নান্দনিক ও নৈসর্গিক এলাকা। এখানে আর কোনোভাবেই পাথর উত্তোলনের অনুমতি দেওয়া হবে না। বরং পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে এলাকাটিকে ঢেলে সাজানো হবে। এতে পাথর শ্রমিকদের জন্য বিকল্প কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে।’

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেন, ‘অবৈধ পাথর উত্তোলন এবং স্টোন ক্রাশার দিয়ে পরিবেশ ধ্বংস করা হচ্ছে। অবিলম্বে এসব অবৈধ কার্যক্রম বন্ধে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্নসহ কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

এ সময় পরিবেশ অধিদপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ও স্থানীয় প্রশাসনের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।