ফেডারেল রিজার্ভের তদন্ত প্রতিবেদন চেয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেশনাল প্যানেল

বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির ঘটনায় নিউইয়র্কের ফেডারেল রিজার্ভের তদন্ত সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চেয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের একটি কংগ্রেশনাল কমিটি। বিজ্ঞান, মহাকাশ ও প্রযুক্তি সম্পর্কিত ওই কমিটির চেয়ারম্যানের পক্ষ থেকে এ নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের প্রতিবেদনে বলা হয়, তদন্ত সম্পর্কে জানতে চাওয়ার পাশাপাশি নির্দিষ্ট কংগ্রেশনাল কমিটির পক্ষ থেকে সুইফট সিস্টেম সম্পর্কে নিউইয়র্কের ফেডারেল রিজার্ভের অভিমত চাওয়া হয়েছে। ব্যাংকিং লেনদেনের বিশেষ মাধ্যম সুইফটের কোড ব্যবহার করে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরি হয়। হ্যাকাররা সুইফটের চুরি হওয়া কোড ব্যবহার করে অর্থ পাঠানোর অনুরোধ করেছিল।
চলতি বছরের ৫ ফেব্রুয়ারি সুইফট সিস্টেমের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব নিউইয়র্ক থেকে প্রায় এক বিলিয়ন ডলার সরানোর চেষ্টা হয়। সেখানে সঞ্চিত বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের ১০ কোটি ১০ লাখ ডলার (প্রায় ৮০৮ কোটি টাকা) চুরি হয়। এর মধ্যে আট কোটি ১০ লাখ ডলার ফিলিপাইনের ব্যাংকিং ব্যবস্থায় প্রবেশ করে। বাকি অর্থ যায় শ্রীলঙ্কায়। সে সময় সুইফট কোড ব্যবহার করে আলাদাভাবে ৩৫টি ভুয়া মেসেজ পাঠানো হয়েছিল ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংকে।
ভুয়া মেসেজের মধ্য থেকে চারটি মেসেজের মাধ্যমে নিউইয়র্ক ফেডারেল রিজার্ভ থেকে প্রথম অর্থ যায় যুক্তরাষ্ট্রের তিনটি ব্যাংকে। এই ব্যাংকগুলো হচ্ছে ব্যাংক অব নিউইয়র্ক, সিটি ব্যাংক ও ওয়েলস ফার্গো ব্যাংক। তারা এই অর্থ পাঠায় ফিলিপাইনের রিজাল কমার্শিয়াল ব্যাংকে। এই ব্যাংক থেকেই টাকাগুলো বিভিন্ন ক্যাসিনোর মাধ্যমে বাজার থেকে বের করে নেওয়া হয়।
ইতিহাসের অন্যতম বড় এই সাইবার জালিয়াতির ঘটনা জানাজানি হলে ফেব্রুয়ারির শুরুতে বিশ্বজুড়ে আলোড়ন সৃষ্টি হয়। ঢাকায় এসে বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যবহৃত সুইফট সিস্টেম পরীক্ষা করে যান তাঁদের দুই কর্মকর্তা।
সে সময় বাংলাদেশ ব্যাংকের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে মেসেজিং সেবা বিষয়ে কথা বলেছিলেন সুইফটের মুখপাত্র নাতাসা দেটেরান। তিনি সে সময় ওয়াল স্ট্রিট জার্নালকে বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের অর্থ লোপাটের ঘটনায় তাদের সিস্টেমের কোনো দুর্বলতা ছিল না। এ ছাড়া সুইফটের নেটওয়ার্কে হ্যাকিং-এর মতো ঘটনা ঘটেছে এমন কোনো ইঙ্গিত তাঁরা পাননি বলে জানান নাতাসা।
তবে এক গবেষণার পর রয়টার্স লিখেছে, রিজার্ভ চুরির পর নতুন যেসব তথ্য বেরিয়ে আসছে, তাতে আন্তর্জাতিক অর্থ লেনদেন কাঠামো নিয়ে ভাবার সময় এসেছে। এত দিনের ধারণার চেয়ে এই দুর্বলতা হয়তো বেশিই নাজুক।