আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে জাবি শিক্ষার্থীদের মহাসড়ক অবরোধ

আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধের দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। গতকাল বৃহস্পতিবার (৮ মে) দিনগত রাত ১২টা ৪৫ মিনিটে বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলা এলাকায় জড়ো হয়ে তারা একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করেন।
মিছিলটি কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক সংলগ্ন ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে গিয়ে অবস্থান নেয়। এতে মহাসড়কের উভয় পাশে যানজটের সৃষ্টি হয়। প্রায় ৩০ মিনিট অবরোধ চলার পর রাত দেড়টার দিকে শিক্ষার্থীরা রাস্তা ছেড়ে দেন।
এ সময় বিক্ষোভকারীরা আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধসহ বিভিন্ন দাবিতে স্লোগান দেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫১ ব্যাচের শিক্ষার্থী নাদিয়া রহমান অন্বেষা বলেন, যে সরকার জুলাই গণঅভ্যুত্থানের উপর দাঁড়িয়ে আছে, সে সরকার আওয়ামী লীগের নিষিদ্ধের বিষয়ে তালবাহানা করছে৷ বাংলাদেশের মানুষ ৫ আগস্ট তাদের রক্ত দিয়েই ঘোষণা দিয়েছে, এই দেশের মানুষ আওয়ামী লীগকে আর চায় না৷ আওয়ামী লীগের মিছিল মানে বিপ্লবীদের মৃত্যু ঘনিয়ে আসবে৷ সরকার যদি ব্যর্থ হয় তবে আমরা কোনো আইনের তোয়াক্কা না করে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের দাবিতে রাজপথে নামবো৷
ইংরেজি বিভাগের ৪৮ ব্যাচের শিক্ষার্থী মাজহারুল ইসলাম বলেন, আর কোনো কথার ফুলঝুড়ি নয়৷ আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের যৌক্তিক বিষয়ে আর কোনো প্রহসন আমরা চাই না। আওয়ামী লীগ আমার ভাইদের নির্বিচারে খুন করেছে, শিশুদের হত্যা করেছে, আমাদের বোনদের নির্দয়ভাবে রক্তাক্ত করেছে সেই আওয়ামী লীগ আর রাজনীতি করতে পারবে না। তাদের ঠাঁই এই বাংলায় হবে না৷ অবিলম্বে আওয়ামী লীগ ও তার অঙ্গ সংগঠনগুলোকে নিষিদ্ধ করতে হবে৷
বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪৭ ব্যাচের শিক্ষার্থী আব্দুর রশিদ জিতু বলেন, আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের জন্য প্রয়োজনে আমরা আবারও জীবন দিবো, তবুও এই বাংলার মাটিতে আওয়ামী লীগকে রাজনীতি করার কোনো অধিকার দিবো না৷ শিক্ষক-রাজনীতিবিদ যারাই আওয়ামী লীগকে রিফাইন্ড করে প্রবেশ করানোর চেষ্টা করছেন আপনাদের পরিণাম ভালো হবে না৷ জুলাই এবং আওয়ামী লীগের বিষয়ে আমরা ছাত্র-জনতারা এক এবং অবিচল৷ বিচার নিশ্চিত করতে না পারলে আপনাদের ক্ষমতায় থাকার কোনো দরকার নাই, আপনারা গদি ছেড়ে দিন৷

মার্কেটিং ৪৭ ব্যাচের শিক্ষার্থী আরিফুজ্জামান উজ্জ্বল বলেন, আওয়ামী লীগ ফিরবে তবে রাজনীতিতে নয়, আসামি হয়ে বিচারের কাঠগড়ায় ফিরবে৷ আমরা দেখেছি এখন আওয়ামী লীগ-যুবলীগ-ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা বিদেশ পালিয়ে যাচ্ছে কিন্তু এই সরকার বিচার নিশ্চিত করতে পারছে না৷ আমরা জানি সেনাবাহিনীর কাছে ম্যাজিস্ট্রেসি পাওয়ার আছে, কিন্তু তারা আওয়ামী সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার করছে না বা আইনের আওতায় আনছে না৷
আরিফুজ্জামান উজ্জ্বল আরও বলেন, ৫ আগস্ট পরবর্তী সময়ে আমরা কারো রক্ত চক্ষু পরোয়া করবো না৷ এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যদি আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতে না পারে তবে আমরা এই সরকারকে টেনে হিঁচড়ে নামাবো৷ আপনারা জুলাইয়ের যে ম্যান্ডেট নিয়ে সরকার পরিচালনা করছেন, আপনারা যদি জুলাই-অভ্যুত্থানের পরেও আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতে না পারেন তবে দায়িত্ব ছেড়ে দেন৷