শিশুকে কোনো প্রাণী কামড়ালে যা করবেন

প্রাণী বা জন্তুর কামড়ে সামান্য ক্ষত থেকে শুরু করে গভীর ক্ষত পর্যন্ত হতে পারে। পোষা প্রাণী, বেওয়ারিশ কুকুর কিংবা বিড়াল অথবা বুনো প্রাণী যেকোনো সময় যে কাউকে কামড় দিয়ে বসতে পারে। একটি শিশুকে যখন কোনো প্রাণী কামড় দেয়, তখন প্রধান উদ্বেগের বিষয় হলো ক্ষতস্থানে সংক্রমণ হতে পারে, এমনকি র্যাবিস বা জলাতঙ্কের মতো জীবননাশী রোগের আশঙ্কাও থাকে। তাই বুনো প্রাণীর কামড় থেকে সাবধান থাকতে হয়।
কী জানবেন
যদি আপনার শিশুকে কোনো প্রাণী কামড়ায়, তাহলে নিচের বিষয়গুলো আপনাকে খোঁজ নিয়ে জানতে হবে :
- কোন ধরনের প্রাণী কামড় দিয়েছে—পোষা, বেওয়ারিশ, না কি বুনো?
- উসকানোর ফলে নাকি বিনা উসকানিতে আক্রমণ করেছে?
- হালনাগাদ প্রাণীর প্রতিষেধক দেওয়া আছে?
- প্রাণীটি কি চিহ্নিত অথবা আটক করা গেছে?
কী করবেন
যদি আপনার শিশুকে কোনো কিছুতে কামড়ায় :
- তাৎক্ষণিক কামড়ানোর স্থানটি অনেকক্ষণ ধরে সাবান ও পানি দিয়ে ধোবেন।
- ক্ষতস্থান ড্রেসিং দিয়ে ঢেকে দেবেন।
- শিশুকে স্বস্তি দেবেন।
যদি আপনার শিশুকে পোষা কুকুর বা বিড়াল কামড়ায়
- জেনে নিন প্রাণীর হালনাগাদ প্রতিষেধক দেওয়া আছে কি না।
- প্রাণীর ওপর লক্ষ রাখুন। পরবর্তী দুই সপ্তাহ লক্ষ রাখুন, তার জলাতঙ্ক হয় কি না।
কখন ডাক্তারের কাছে যাবেন
আপনার শিশুকে অবশ্যই ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাবেন যদি :
- প্রাণীর কামড় সাধারণ আঁচড়ের চেয়ে বেশি হয়।
- শিশুর হালনাগাদ টিটেনাস বা ধনুষ্টংকার প্রতিষেধক নেওয়া না থাকে অথবা শেষ বুস্টার ডোজের পরে পাঁচ বছরের বেশি সময় অতিক্রান্ত হয়।
- প্রাণীর প্রতিষেধক দেওয়া না থাকে অথবা প্রাণীর প্রতিষেধক বর্তমান সময় পর্যন্ত কার্যকর না থাকে।
- প্রাণীর কামড় বা আঁচড় বুনো কিংবা বেওয়ারিশ প্রাণী দ্বারা সংঘটিত হয়।
- কামড়ের স্থানটা লাল হয়, ফুলে যায়, গরম হয় কিংবা ব্যথাযুক্ত হয়।
- কুকুর কামড়ানোর পর দ্রুত চিকিৎসকের কাছে গিয়ে পরামর্শ অনুযায়ী র্যাবিস ভ্যাকসিন দিন।
প্রতিরোধ
আপনার শিশুকে প্রাণীর কামড় থেকে প্রতিরোধ করতে নিচের ব্যবস্থাগুলো নেবেন :
- আপনার শিশুকে শেখাবেন, সে যেন কোনো বুনো অথবা বেওয়ারিশ প্রাণীর কাছে না যায় কিংবা খাবার না দেয়।
- শিশুকে শেখাবেন, সে যেন পোষা প্রাণীকে বিরক্ত না করে কিংবা খারাপ আচরণ না করে।
- শিশু যেন প্রাণীদের শুধু দেখেই সন্তুষ্ট থাকে, তাদের কাছে না ভেড়ে।
- শিশুকে বাদুড়ের কাছ থেকে দূরে রাখবেন।
- বেওয়ারিশ কোনো প্রাণী দেখলেই যথাযথ কর্তৃপক্ষকে জানাবেন।
লেখক : সহকারী অধ্যাপক, অর্থোপেডিকস ও ট্রমাটোলজি বিভাগ, ঢাকা ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল।