মায়ের কারণে হিমোফিলিয়া হয় এ কুসংস্কার দূর করতে হবে : বিএমইউ উপাচার্য

রোগী বা রোগীর মায়ের কোনো না কোনো পাপের কারণে হিমোফিলিয়া অসুখ হয়েছে এ কুসংস্কার দূর করতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএমইউ) উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শাহিনুল আলম। বিশ্ব হিমোফিলিয়া দিবস উপলক্ষে আজ বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) এক শোভাযাত্রা শেষে তিনি এ মন্তব্য করেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলা থেকে এই শোভাযাত্রা শুরু হয়ে ডি ব্লকের সামনে এসে শেষ হয়।
শোভাযাত্রা পরবর্তী সংক্ষিপ্ত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএমইউ উপাচার্য বলেন, হিমোফিলিয়া রোগের জন্য সচেতনতা অত্যন্ত প্রয়োজন। কারণ রক্তক্ষরণের ব্যাপারে সমাজে নানা কুসংস্কার থাকে, সেগুলো দূর করতে হবে। অনেকে মনে করে রোগী বা রোগীর মায়ের কোনো না কোনো পাপের কারণে এই অসুখটি হয়েছে, সেই কুসংস্কারটি দূর করা প্রয়োজন।
উপাচার্য আরও বলেন, একই সাথে রোগীদের সেবা নিশ্চিত করা, বিশেষ করে বিভিন্ন জায়গায় চিকিৎসকের অপ্রতুলতা দূর করা এবং হিমোফিলিয়ার সেবা কেন্দ্রগুলো চালু করা দরকার। আমাদের এই বিশ্ববিদ্যালয়ে হিমোফিলিয়া সেন্টার আছে, যা অত্যন্ত আশার কথা। চিকিৎসাকে সহজলভ্য করার ওপর গুরুত্বারোপ করে তিনি আরও বলেন, আমাদের দেশে রোগীদের ব্যয়ের সর্বোচ্চ অংশটুকু খরচ হয় ওষুধ কেনার ক্ষেত্রে। এক্ষেত্রে চিকিৎসক ও রোগীদের সচেতনতা অত্যন্ত প্রয়োজন।
পৃথিবীতে অনেক হিমোফিলিয়া রোগী সুস্থ হয়ে সমাজকে নেতৃত্ব দিয়েছেন ও দিচ্ছেন। আমরা যদি ওষুধ ও চিকিৎসাকে সহজলভ্য করতে পারি, তাহলে এটি সম্ভব। আমরা আগামীতে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের হিমোফিলিয়া সেন্টারকে একটি বিস্তর চিকিৎসা কেন্দ্রে পরিণত করবো।
এ সময় প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ডা. মো. মুজিবুর রহমান হাওলাদার বলেন, যে কোনো রোগের চিকিৎসার চেয়ে রোগ-প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থাকে গণমানুষের মধ্যে তুলে ধরতে পারলে সেটিই হবে একটি বড় অর্জন। বিশ্ব হিমোফিলিয়া দিবসের উদ্দেশ্য হচ্ছে গণমানুষের কাছে সচেতনতার বার্তা পৌঁছে দেওয়া। সাধারণত রক্তবাহিত এই রোগটি নির্ণয় হয় না, অনেক রোগী আছে যাদের রোগ নির্ণয় না হওয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ডেন্টালে অনেক রোগী আসে যাদের দাঁত দিয়ে রক্ত বের হয়, তারা যে হিমোফিলিয়া রোগে আক্রান্ত তারা জানেন না।
অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, হেমাটোলজি বিভাগের কর্মকর্তা, রক্তরোগ বিশেষজ্ঞ, সাধারণ চিকিৎসক ও হিমোফিলিয়া আক্রান্ত রোগীরা উপস্থিত ছিলেন।