বর্ষায় রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে যেসব খাবার খাবেন

বর্ষাকাল মানেই জলাবদ্ধতা, স্যাঁতস্যাঁতে পরিবেশ, ঠান্ডা-কাশি, ভাইরাল জ্বর ও পেটের সমস্যা। বর্ষাকালে মানুষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়। ঠান্ডা-কাশি, ডায়রিয়া, ইনফেকশন বেড়ে যায়, শরীর দুর্বল হয়ে পড়ে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়। এই সময়ে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বজায় রাখা খুবই জরুরি এবং সঠিক খাবার নির্বাচন ও পুষ্টিগুণ বজায় রাখা প্রয়োজন।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে যেসব খাবার খাবেন
রঙিন শাক-সবজি : যেসব খাবার প্রাকৃতিকভাবে উজ্জ্বল বা গাঢ় রঙ রয়েছে (যেমন- লাল, সবুজ, হলুদ, বেগুনি, কমলা ইত্যাদি) খাবার খেতে পারেন। এইসব উজ্জ্বল বা গাঢ় প্রমাণ করে যে, সেখানে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ভিটামিন, মিনারেল ও ফাইটোকেমিক্যাল আছে, যা আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী করে, কোষকে রক্ষা করে এবং রোগ প্রতিরোধে ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। যেমন- গাজর, বেগুন, বিটরুট, কুমড়ো, টমেটো, পালং শাক, লাউ, ধনেপাতা, মুলা শাক ও লাল শাক ইত্যাদি।
পুষ্টিগুণে ভরপুর ফলমূল : প্রতিদিন ১–২টি মৌসুমি ফল রাখুন, তা হতে পারে কমলা, মাল্টা, পাকা পেঁপে, কালো জাম, আঙ্গুর, আনারস, কলা, পেয়ারা, কাঁচা আমের শরবত, আমলকি ও লটকন ইত্যাদি।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিকারী মশলা ব্যবহার করুন : যেমন আদা, রসুন, হলুদ, কালো জিরা, দারুচিনি, লবঙ্গ, মেথি।
পর্যাপ্ত পানি পান করুন (৭–৮ গ্লাস) : সঠিক হাইড্রেশন মানেই ভালো রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা। পানির সাথে লেবু, মধু, আদা বা তুলসি মিশিয়ে পান করতে পারেন, এতে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।
এ ছাড়া আরও যেসব খাবার খাবেন
– গরম চিকেন স্যুপ, ডাল বা ভেজিটেবল খিচুড়ি খাওয়া যেতে পারেন।
– প্রতিদিনের আহারে দুধ/ টকদই রাখুন।
– পর্যাপ্ত ঘুমান এবং হালকা ব্যায়াম করুন।
বর্ষায় যেসব খাবার এড়িয়ে চলতে হবে
– খোলা পানীয়/ রাস্তার পাশে শরবত খাবেন না।
– বাসি/কাঁচা সালাদ বা অর্ধসিদ্ধ খাবার খাবার খাবেন না।
– রাস্তাঘাটে কেটে রাখা ফল (আনারস, পেঁপে, তরমুজ) ইত্যাদি খাবেন না।
– কাঁচা দুধ বা পচা দই খাবেন না।
– অতিরিক্ত তেল-মসলা ও ভাজাপোড়া বা ফাস্টফুড খাবার এড়িয়ে চলুন।
– ফ্রিজে রাখা পুরাতন রান্না,পুনরায় না গরম করে খাওয়া
বর্ষাকালে সঠিক খাদ্যাভ্যাসই হতে পারে আপনার রোগ প্রতিরোধের অন্যতম অস্ত্র। মৌসুম বদলাবে, রোগ আসবে- কিন্তু আপনার সচেতনতাই হতে পারে সুস্থ জীবনের চাবিকাঠি। খাবার হোক আপনার ঔষধ!
লেখক : পুষ্টিবিদ শেখ সুবর্ণা আক্তার সিনথি