লাখো মানুষের ভরসা মাত্র দুই চিকিৎসক!

পিরোজপুরের ইন্দুরকানী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভয়াবহ জনবল সংকটে চিকিৎসাসেবা চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে। লাখো মানুষের একমাত্র চিকিৎসা কেন্দ্রটিতে মাত্র দুজন চিকিৎসকের ওপর ভর করে চলছে স্বাস্থ্যসেবা। পর্যাপ্ত নার্স, চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী এবং ডায়াগনস্টিক সুবিধার অভাবে দিন দিন দুর্ভোগ বাড়ছে স্থানীয়দের।
৩১ শয্যার এই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি নির্মিত হয় ২০০৬ সালে। অনুমোদিত চিকিৎসকের পদ রয়েছে ১০টি, তবে বর্তমানে কর্মরত রয়েছেন মাত্র দুজন। ডাক্তার সংকট এতটাই তীব্র যে, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কর্মকর্তা ডা. ননীগোপাল নিজেই রাত জেগে রোগীদের চিকিৎসা দিচ্ছেন। প্রতিদিন গড়ে প্রায় ৩০০ জন রোগী ইনডোর ও আউটডোর বিভাগে চিকিৎসা নিতে আসছেন। রোগীর চাপ সামলাতে না পেরে অনেক সময় রোগীদের থাকতে হচ্ছে হাসপাতালের ফ্লোরে।
শুধু চিকিৎসকই নয়, নার্স ও সহায়ক জনবলের সংকটও প্রকট। আয়া ও বাবুর্চির দুটি করে পদের বিপরীতে কর্মরত মাত্র একজন। ওয়ার্ড বয়ের পদের বিপরীতেও রয়েছে একই চিত্র। ফলে হাসপাতালের পরিবেশ যেমন অস্বাস্থ্যকর হয়ে পড়েছে, তেমনি ব্যাহত হচ্ছে পরিষেবা কার্যক্রম। এর পাশাপাশি রয়েছে শিশুদের জন্য কোনও বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক না থাকা, ওষুধের সংকট ও পরিচ্ছন্নতার ঘাটতি।
উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. ননীগোপাল বলেন, মাত্র দুজন মেডিকেল অফিসার দিয়ে এত বড় জনসংখ্যার চিকিৎসা সেবা দেওয়া অসম্ভব। মাঝে মাঝে নতুন ডাক্তার এলেও, কিছুদিনের মধ্যেই তারা বদলি হয়ে যান। তারপরও আমরা রোগীদের সেবা দেওয়ার সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।
পিরোজপুর জেলা সিভিল সার্জন ডা. মতিউর রহমান বলেন, জনবল সংকট দীর্ঘদিনের সমস্যা। আমরা মন্ত্রণালয়কে বারবার জানিয়েছি। দ্রুত পদায়ন ও নিয়োগ না হলে পরিস্থিতির উন্নয়ন সম্ভব নয়।