সাফ অনূর্ধ্ব-২০ নারী চ্যাম্পিয়নশিপ
নাটকীয় ম্যাচে ভুটানকে উড়িয়ে দিল বাংলাদেশ

দেশের ফুটবলে এমন সন্ধ্যা খুব একটা আসেনি। ফুটবলে মধ্যাহ্ন বিরতি থাকে সর্বোচ্চ ১৫ মিনিট। সেটিই কি না আজ মঙ্গলবার (১৫ জুলাই) সন্ধ্যায় হয়ে দাঁড়ায় প্রায় ৩ ঘণ্টা। সাফ অনূর্ধ্ব-২০ নারী চ্যাম্পিয়নশিপে ভুটানের মুখোমুখি হয় বাংলাদেশ। বসুন্ধরা কিংস অ্যারেনায় প্রথমার্ধ শেষে বৈরি আবহাওয়ায় শঙ্কা তৈরি হয় দ্বিতীয়ার্ধ মাঠে গড়ানো নিয়ে।
শঙ্কা ও অনিশ্চয়তা কাটিয়ে খেলা মাঠে গড়ায়। তবে, কিংস অ্যারেনায় নয়। বসুন্ধরা স্পোর্টস কমপ্লেক্সের প্র্যাকটিস গ্রাউন্ডে। তাতে দুরন্ত শৈলিতে বাংলাদেশ তুলে নেয় ৪-১ গোলের জয়।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকে আগ্রাসী খেলা উপহার দেয় বাংলাদেশ। ৫০ মিনিটে মাঝমাঠ থেকে জুথির বাড়ানো ক্রস পেয়ে ডানপ্রান্ত থেকে বল টানেন তৃষ্ণা রাণী। বাড়ান শান্তির দিকে। মিস হয় বলের ফ্লাইট। স্রোতের বিপরীতে গোল হজম করে স্বাগতিকরা। ৫২ মিনিটে বাংলাদেশকে স্তব্ধ করে ব্যবধান কমায় ভুটান। দলের পক্ষে গোল করেন সাংগাই ওয়াংমো।
৫৬ মিনিটে গোলরক্ষককে একা পেয়েও বল বাইরে মারেন উমহেলা। বাংলাদেশ হারায় সুবর্ণ সুযোগ। ৫৭ মিনিটে শান্তি আর ভুল করেননি। কর্ণার থেকে পাওয়া ডেলিভারিকে জালে পাঠিয়ে বাংলাদেশকে এগিয়ে নেন শান্তি। ৬৮ মিনিটে বাম দিক থেকে শান্তি দারুণ ক্রস করেন। বল পেয়ে লব করেছিলেন বদলি খেলোয়াড় মুনকি আক্তার। তবে সেটি জালের ওপর দিয়ে চলে যায়।
৭৬ মিনিটে ম্যাচের ভাগ্য বদলে দেন মুনকি। ভুলের প্রায়শ্চিত্ত করেন বাংলাদেশি তারকা। মাঝমাঠে বল পেয়ে ক্ষিপ্রতায় ছিটকে ফেলেন ভুটানের দুই ফুটবলারকে। মুনকিকে ধরতে পেছন থেকে তিনজন ছুটলেও গতির কাছে পরাস্ত হন। অসাধারণ শটে বল জালে জড়ান তিনি।
৭৯ মিনিটে বাংলাদেশ পায় চতুর্থ গোলের দেখা। রাইট উইং থেকে উমহেলার অনবদ্য ক্রস খুঁজে নেয় শান্তির পা। দারুণ শটে নিজের হ্যাটট্রিক পূরণ করেন ফরোয়ার্ড শান্তি। বাংলাদেশ পায় ম্যাচজয়ী গোল।
এর আগে ম্যাচের তৃতীয় মিনিটে বল পান তৃষ্ণা রাণী। রক্ষণভাগকে পেছনে ফেলায় সামনে কেবল ভুটান গোলরক্ষক পিমা ইয়াংজম। ওয়ান টু ওয়ানে তৃষ্ণা শট নিলেও পিমা তা ঠেকিয়ে দেন। ষষ্ঠ মিনিটে আবারও চেষ্টা করেছিকেন তৃষ্ণা। সেবারও ঠেকান গোলরক্ষক।
সপ্তম মিনিটে আর হতাশ হতে হয়নি বাংলাদেশকে। ডানপ্রান্ত থেকে উমহেলা মারমার বাড়ানো বলে পা ছোঁয়ান তৃষ্ণা। ব্যর্থ হন। ফিরতি শটে ভুল করেননি শান্তি মারডি। বল জালে পাঠিয়ে এগিয়ে নেন বাংলাদেশকে।

১৪ মিনিটে আরেকটি সুযোগ আসে বাংলাদেশের সামনে। উমহেলার ডিফেন্সচেরা ক্রস থেকে অল্পের জন্য পা ছোঁয়াতে পারেননি শান্তি। চেষ্টার অবশ্য কমতি তিনি রাখেননি। গোলের পর দুদলের লক্ষ্য ছিল মাঝমাঠের দখল নেওয়া। বৃষ্টির পানিতে মাঠের অবস বেহাল থাকায় তা আর হয়নি। এভাবেই কাটে কিছু সময়৷ ২৭ মিনিটে লিড বাড়ানোর সুযোগ আসে বাংলাদেশের সামনে। বাম দিক থেকে আসা বলে উমহেলা শট নিয়েছিলেন। সেটি বার পোস্ট ঘেঁষে বেরিয়ে গেলে ব্যবধান বাড়ানো হয় না।
৩৯ মিনিটে শান্তি তৈরি অসাধারণ এক সুযোগ। বাম প্রান্ত থেকে একাই ঢুকে যাব ভুটানের রক্ষণে। জোরালো শট ছিল ঠিক বার বরাবর। ভুটান গোলরক্ষকের দারুণ সেইভে বঞ্চিত হয় বাংলাদেশ।
মাঝে বাংলাদেশ শিবিরে কয়েকবার হানা দেয় ভুটান। স্বাগতিক গোলরক্ষক মিলি আক্তারের কল্যাণে বেঁচে যায় বাংলাদেশ।