কাশিমপুর কারাগার থেকে মুক্তি পেলেন ২৭ সাবেক বিডিআর সদস্য
বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনায় বিস্ফোরক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে করা মামলায় গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে জামিনে মুক্তি পেয়েছেন ২৭ জন সাবেক বিডিআর সদস্য। কারা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বুধবার (১৪ মে) সকাল ১০টা থেকে তারা মুক্তি লাভ করেন। এ সময় কারাগারের ফটকে তাদের আত্মীয়-স্বজনরা উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে, গত সোমবার (১২ মে) আদালত এই মামলার ৪০ জন আসামির জামিন মঞ্জুর করেন।
আসামিপক্ষের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত সোমবার কেরানীগঞ্জে অবস্থিত ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে স্থাপিত বিশেষ আদালতের (প্রথম অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ) বিচারক ইব্রাহীম মিয়া বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনায় বিস্ফোরক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে করা মামলায় ৪০ জনের জামিন আবেদন মঞ্জুর করেন।
বিস্ফোরক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের মামলায় জামিন পাওয়া ৪০ জনের মধ্যে বুধবার সকালে কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার পার্ট-১ থেকে পাঁচজন, পার্ট-২ থেকে ১০ জন ও হাইসিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে ১১ জন মুক্তি লাভ করেন। এর আগে, মঙ্গলবার (১৩ মে) এই ইউনিট থেকে আরও এক বিডিআর সদস্য জামিনে মুক্তি পান। হত্যা মামলায় খালাস পাওয়া ১৭৮ জন এর আগে বিস্ফোরক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের মামলায় জামিন পেয়েছিলেন। এ নিয়ে এই মামলায় মোট ২১৮ জন জামিন পেলেন।
কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার পার্ট-এর জেল সুপার মোহাম্মদ আল মামুন জানান, মঙ্গলবার বিকেলে বন্দি ২৭ সাবেক বিডিআর সদস্যের জামিনের কাগজপত্র কারাগারে এসে পৌঁছায়। পরে কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করে বুধবার সকালে তাদের জামিনে মুক্তি দেওয়া হয়।
উল্লেখ্য, ২০০৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি ঢাকার পিলখানায় তৎকালীন বিডিআর সদর দপ্তরে বিদ্রোহের ঘটনা ঘটে। এই বিদ্রোহে বিডিআরের তৎকালীন মহাপরিচালক মেজর জেনারেল শাকিল আহমেদসহ ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তা ও বেসামরিক ব্যক্তিসহ মোট ৭৪ জন নিহত হন। পিলখানায় নৃশংস হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ২০০৯ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি হত্যা ও বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে পৃথক দুটি মামলা দায়ের করা হয়।
হত্যা মামলায় ৮৫০ জনকে আসামি করা হয়, যা দেশের বিচার বিভাগের ইতিহাসে আসামির সংখ্যার দিক থেকে বৃহত্তম মামলা। বিচারিক আদালত ২০১৩ সালের ৫ নভেম্বর এই মামলার রায় দেন। রায়ে ১৫২ জনকে মৃত্যুদণ্ড, ১৬০ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ২৫৬ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয়। রায়ে খালাস পান ২৭৮ জন। রায় ঘোষণার আগে চার আসামি মারা যান।
হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় করা মামলায় বিচারিক আদালত ও হাইকোর্ট এরই মধ্যে রায় দিয়েছেন এবং মামলাটি চূড়ান্ত নিষ্পত্তির জন্য এখন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে শুনানির অপেক্ষায় রয়েছে। অন্যদিকে বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে করা মামলাটি এখনো বিচারিক আদালতে সাক্ষ্য গ্রহণ পর্যায়ে রয়েছে।