প্রথম সাক্ষাৎকারে শাবনূর
কে বলে সালমান নেই?

চলচ্চিত্র জগতের সবাইকে ও অগণিত ভক্তকে কাঁদিয়ে ১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর মৃত্যুবরণ করেন নায়ক সালমান শাহ। সালমানের মৃত্যুর খবর তখনো মানতে পারেননি চিত্রনায়িকা শাবনূর। এখনো তিনি ভাবতে পারেন না, সালমান শাহ আর বেঁচে নেই।
‘সালমান শাহর মৃত্যুর পর পর বাংলাদেশ বেতার থেকে নায়িকা শাবনূরের একটি সাক্ষাৎকার নেওয়ার জন্য যোগাযোগ করা হয়। কিন্তু শাবনূর এতটাই ভেঙে পড়েছিলেন যে তখন তিনি সাক্ষাৎকার দিতে পারেননি। সালমানের মৃত্যুর দুদিন পর বেতারের স্টুডিওতে শাবনূর এসে কান্নাজড়িত কণ্ঠে সাক্ষাৎকার দেন,’ কথাগুলো জানালেন জনপ্রিয় উপস্থাপক মাজহারুল ইসলাম।
প্রিয় পাঠক, আপনাদের জন্য রেডিওতে দেওয়া শাবনূরের সেই সাক্ষাৎকার তুলে ধরা হলো।
সাক্ষাৎকারে শাবনূর বলেন :
বাংলাদেশের চলচ্চিত্রে একটি নিদারুণ বেদনার দিন ৬ সেপ্টেম্বর। এ বেদনাবিধুর দিনে আজকের প্রজন্মের সবচেয়ে জনপ্রিয় নায়ক সালমান শাহ আমাদের ছেড়ে চিরবিদায় নিয়ে চলে গেছে। মাটির তারকা সালমান শাহ আজ আকাশের তারকা হয়ে আকাশেই চলে গেল।
অকালে চলেই যদি যাবে, তাহলে কেন এই সালমান-শাবনূর জুটি? ভক্তদের আমি একা কেমন করে বোঝাব, আর কোনো দিন নতুন কোনো ছবিতে সালমান-শাবনূরকে দেখা যাবে না। কে বলে সালমান নেই? কে বলে আমাদের প্রিয় নায়ক সালমান নেই? ওই তো, কত ছবির রুপালি পর্দায় আমি আছি, নায়ক সালমান শাহ আছে। কোটি ভক্তের মধ্যে নায়ক সালমানের স্মৃতি আমাকেও ক্ষতবিক্ষত করে দেয়। ওর অসমাপ্ত ছবির কাজগুলো আমার কাছে মনে হয় একটি করে বেদনার পাহাড়। কত ছবিতে অভিনয়। ওর সঙ্গে হেসেছি, কেঁদেছি। কিন্তু বাস্তবে যে ওর জন্য আমাদের কাঁদতে হবে, ভাবিনি। বাস্তবে সবাইকে ফাঁকি দিয়ে দুঃখের সাগরে ভাসিয়ে চলে গেছে প্রিয় নায়ক সালমান।
যদি কেউ কোনো দিন জাফলংয়ে সিলেটের চা বাগানে কিংবা জৈন্তা পাহাড়ে শুটিংয়ে যায়, নিশ্চয়ই তোমার কথা মনে পড়বে নায়ক সালমান। সুরমা নদীর পাড়ে হজরত শাহজালালের (রহ.) মাজার প্রাঙ্গণে সিলেটের পুণ্য মাটির সঙ্গে মিশে আছে আমাদের প্রিয় নায়ক সালমান।
তোমার আত্মার শান্তি হোক পবিত্র ভূমির স্পর্শে। নায়ক সালমান নেই—বিশ্বাস হয় না। এই পৃথিবীর বুকে নতুন কোনো ছবিতে অভিনয় করতে আর আসবে না আমাদের প্রিয় নায়ক সালমান। বাংলাদেশ চলচ্চিত্রের আকাশে এক ধূমকেতুর মতো এসেছিল নায়ক সালমান। আমি শাবনূর, আমার বিশ্বাস, নায়ক সালমান শাহ যুগে যুগে চির অমর হয়ে থাকবে তাঁর ভক্তদের হৃদয়ে।