গাজায় আরও ৭২ ফিলিস্তিনিকে হত্যা করল ইসরায়েল

গাজায় ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর হামলায় গত ২৪ ঘণ্টায় অন্তত ৭২ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে ইসরায়েলের এ ‘গণহত্যার’ মোট মৃতের সংখ্যা কমপক্ষে ৫৪ হাজার ৩২১ জনে দাঁড়িয়েছে বলে জানিয়েছে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ৭২টি মরদেহ হাসপাতালে আনা হয়েছে। এ ছাড়া আহত অবস্থায় আনা হয়েছে আরও ২৭৮ জনকে। এর ফলে ইসরায়েলি হামলায় আহতদের মোট সংখ্যা পৌঁছেছে এক লাখ ২৩ হাজার ৭৭০ জনে।
এদিকে, সরকারি মিডিয়া অফিসের তথ্য বলছে, মৃতের সংখ্যা ৬১ হাজার ৭০০ ছাড়িয়েছে। উদ্ধারকারীরা তাদের কাছে পৌঁছাতে না পারায় এখনও অনেক ভুক্তভোগী ধ্বংসস্তূপের নিচে এবং রাস্তায় আটকা পড়ে আছে।
ইসরায়েল গত ১৮ মার্চ গাজা উপত্যকায় পুনরায় আক্রমণ শুরু করে, যা জানুয়ারিতে হওয়া যুদ্ধবিরতি এবং বন্দি বিনিময় চুক্তি বাতিল করে দেয়। গাজায় দিনদিন মারাত্মক বোমাবর্ষণ তীব্রতর হচ্ছে। জাতিসংঘ ও সাহায্য সংস্থাগুলোর মতে, সেখানকার পরিবারগুলো অনাহারে এবং বেঁচে থাকার মৌলিক উপায় থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
গত নভেম্বরে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত গাজায় যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু, তার সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে। ছিটমহলে যুদ্ধের জন্য ইসরায়েল আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে গণহত্যার মামলার মুখোমুখিও।
উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের ৭ই অক্টোবর হামাসের নেতৃত্বে পরিচালিত হামলায় ইসরায়েলে আনুমানিক এক হাজার ১৩৯ জন নিহত হয় এবং ২০০ জনেরও বেশি লোককে বন্দী করা হয়েছিল। এরপর থেকেই ইসরায়েল গাজায় ব্যাপক সামরিক অভিযান চালিয়ে আসছে, যার ফলে ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয় সৃষ্টি হয়েছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানালেও, পরিস্থিতি এখনও অত্যন্ত উত্তেজনাপূর্ণ।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের সহায়তায় ত্রাণ বিতরণের প্রচেষ্টা মারাত্মক সহিংসতা ও বিশৃঙ্খলার জন্ম দিয়েছে, যা ফিলিস্তিনিদের মধ্যে ব্যাপক হতাশা সৃষ্টি করেছে। জাতিসংঘ জানিয়েছে, ইসরায়েল গাজায় অত্যন্ত প্রয়োজনীয় মানবিক সরবরাহ পৌঁছাতে এবং বিতরণ করতে বাধা দিচ্ছে, প্রায় ৬০০ ট্রাক পণ্য একটি ক্রসিং পয়েন্টে আটকে আছে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে, ইসরায়েল উত্তর গাজার শেষ কার্যকর হাসপাতাল আল-আওদা বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছে, যদিও সেখানে এখনও কয়েক ডজন রোগী অবস্থান করছে।
হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, ইসরায়েল হামাসকে দেওয়া নতুন গাজা যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবে ‘স্বাক্ষর’ করেছে। তবে ফিলিস্তিনি দলটি জানিয়েছে, তারা পরিকল্পনাটি পর্যালোচনা করছে।