বিজয় উৎসবে ১১ জন নিহতের ঘটনায় বেঙ্গালুরুর বিরুদ্ধে মামলা

রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর (আরসিবি) আইপিএল শিরোপা উদযাপন ঘিরে পদদলিত হয়ে ১১ জনের মৃত্যু ও বেশ কিছু লোক আহত হওয়ার ঘটনায় স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে মামলা করেছে বেঙ্গালুরু পুলিশ। এই মামলায় আরসিবি, কর্ণাটক স্টেট ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন (কেএসসিএ) ও ডিএনএ এন্টারটেইনমেন্টকে অভিযুক্ত করা হয়ছে।
রাজ্য সরকার জানায়, ডিএনএ এন্টারটেইনমেন্ট আরসিবির আইপিএলের বিজয় উদযাপনের ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে ছিল, অন্যদিকে কেএসসিএ এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিল। খবর এনডিটিভির।
প্রতিবেদনে বলা হয়, আজ বৃহস্পতিবার (৫ জুন) রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠকে এই মামলাটি ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্টের (সিআইডি) কাছে হস্তান্তর করা হবে কিনা, তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। তারা পদদলনের ঘটনার কারণ, কেএসসিএ, আরসিবি ফ্র্যাঞ্চাইজি, ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি ও পুলিশ কর্মীদের ভূমিকা খতিয়ে দেখতেও সম্মত হয়েছেন। এই ঘটনার জন্য দায়ী কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পুলিশ ভারতীয় ন্যায় সংহিতার (বিএনএস) পাঁচটি ধারায় মামলা দায়ের করেছে, যার মধ্যে ১০৫ ধারা (অপরাধমূলক নরহত্যা) অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, কেএসসিএ, ডিএনএ নেটওয়ার্কস ও আরসিবি ফ্র্যাঞ্চাইজি অনুমতি না থাকা সত্ত্বেও অনুষ্ঠানটি চালিয়ে গেছে। এমনকি পুলিশ সতর্ক করার পরেও তারা যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি বা ভিড় নিয়ন্ত্রণ করেনি।

প্রাথমিক তদন্ত অনুযায়ী, আরসিবির সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট থেকে বারবার স্টেডিয়ামের গেটে বিনামূল্যে পাস বিতরণের কথা পোস্ট করা হয়েছিল, যা ভক্তদের আরও বেশি করে জড়ো হতে উৎসাহিত করে। এই পরিস্থিতিতে পুলিশ সর্বোচ্চ ব্যবস্থা গ্রহণ করেছিল ,যার ফলে আরও বড় ট্র্যাজেডি এড়ানো সম্ভব হয়েছিল।
এই ঘটনার তদন্তের জন্য কর্ণাটক সরকারের নিযুক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট জি জগদীশ আজ বলেন, প্রাথমিক তথ্য প্রতিবেদন (এফআইআর) ছাড়াও কেএসসিএ, বেঙ্গালুরু মেট্রো ও আরসিবি ফ্র্যাঞ্চাইজিকেও নোটিশ পাঠানো হবে।
এদিন বেঙ্গালুরুর চিন্নাস্বামী স্টেডিয়াম ও গেটগুলো পরিদর্শন করেছেন জেলা ম্যাজিস্ট্রেট জি জগদীশ, যেখানে উদযাপনের সময় ভিড় সৃষ্টি হয়েছিল। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, আমি আজ থেকেই তদন্তের কাজ শুরু করেছি। প্রতিবেদনটি ১৫ দিনের মধ্যে রাজ্য সরকারের কাছে জমা দিতে হবে।

জেলা ম্যাজিস্ট্রেট বলেন, তিনি ঘটনার সময় এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ ও অন্যান্য ভিজ্যুয়াল বিশ্লেষণ করবেন। নিহত ও আহতদের পরিবারের কাছ থেকে তাদের বক্তব্য নেবেন। আগামী ১৩ জুন সকাল সাড়ে ১০টা থেকে দুপুর ১ টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত সাধারণ জনগণও তাদের বক্তব্য দিতে পারবে। একইসঙ্গে বিজয় উদযাপনের সময় মোতায়েন করা পুলিশ সদস্যদের একটি তালিকা তৈরি করা হবে এবং তাদের বক্তব্যও চাওয়া হবে।
কর্ণাটকের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জি পরমেশ্বর বলেন, খেলোয়াড়দের বিজয় উদযাপনের জন্য বেঙ্গালুরুতে আনার বিষয়টি রাজ্য সরকারের চাওয়া ছিল না। আমরা রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর ফ্র্যাঞ্চাইজি বা কর্ণাটক স্টেট ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনকে এ বিষয়ে কোনো অনুরোধ করিনি। তারাই বিজয় উদযাপন অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিল। সরকারও অনুভব করেছিল, খেলোয়াড়দের সংবর্ধনা দেওয়া উচিত এবং উদযাপনের অংশ হওয়া উচিত কারণ এটি বেঙ্গালুরুর দল। এটাই। কেএসসিএ এবং আরসিবি দলটিকে উদযাপনের জন্য বেঙ্গালুরুতে এনেছিল।