ট্রাম্পের যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান, কিয়েভে রাশিয়ার ব্যাপক ড্রোন হামলা

রাশিয়ার টানা ড্রোন হামলায় আজ শুক্রবার (৪ জুলাই) ভোরে ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভের আকাশ কালো ধোঁয়ায় আচ্ছাদিত হয়ে পড়ে। রাতভর রাশিয়ার ভারী ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় কিয়েভের প্রায় প্রতিটি জেলায় বিস্ফোরণ ঘটে বলে জানিয়েছে ইউক্রেনীয় কর্তৃপক্ষ। খবর বিবিসির।
ইউক্রেনের বিমানবাহিনী জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) রাতের হামলায় রাশিয়া ৫৫০টি ড্রোন এবং ১১টি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে, যা আগের রেকর্ডকেও ছাড়িয়ে গেছে। এর মধ্যে ৭২টি ড্রোন ইউক্রেনের আকাশ প্রতিরক্ষা ভেদ করতে সক্ষম হয়েছে।
হামলার রাতে কিয়েভে টানা আট ঘণ্টা সাইরেন বেজেছে। একের পর এক বিস্ফোরণ, আকাশ প্রতিরক্ষার গুলি এবং ড্রোনের গুঞ্জন রাতটিকে বিভীষিকাময় করে তোলে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ফোনালাপের কয়েক ঘণ্টা পর এই হামলার ঘটনা ঘটে।
ট্রাম্প পরে সাংবাদিকদের বলেন, পুতিনের সঙ্গে আলাপে তিনি “খুব হতাশ” হয়েছেন এবং মনে করছেন না পুতিন যুদ্ধ থামাতে ইচ্ছুক।
ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এই রাতকে “কিয়েভের সবচেয়ে ভয়াবহ রাতগুলোর একটি” আখ্যা দিয়ে অবিলম্বে কঠোর নিষেধাজ্ঞার আহ্বান জানিয়েছেন। প্রেসিডেন্টের প্রধান উপদেষ্টা আন্দ্রি সিবিহা এক্সে লিখেছেন, “পুরোপুরি ভয়াবহ এবং নির্ঘুম রাত কিয়েভে। সবচেয়ে খারাপ রাতগুলোর একটি।”
তিনি আরও লিখেছেন, পুতিন ট্রাম্পের সঙ্গে কথা বলার পরপরই এই হামলা চালিয়ে “ইচ্ছাকৃতভাবে যুক্তরাষ্ট্র এবং যুদ্ধ বন্ধের আহ্বান জানানো সকলের প্রতি অবজ্ঞা দেখিয়েছেন।”
ইউক্রেনের জরুরি সেবার প্রকাশিত ভিডিওতে দেখা গেছে, রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে আগুন নেভানোর চেষ্টা করছেন দমকলকর্মীরা। ইউক্রেনীয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, কিয়েভে হামলায় অন্তত ২৩ জন আহত হয়েছেন, রেল অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, বহু ভবন ও যানবাহন পুড়ে গেছে।
ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি জানান, তিনি ট্রাম্পের সঙ্গে অস্ত্র সরবরাহ নিয়ে কথা বলতে চান। কারণ ওয়াশিংটন কিছু গুরুত্বপূর্ণ অস্ত্র সরবরাহ স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যা ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা সক্ষমতাকে দুর্বল করবে বলে সতর্ক করেছে কিয়েভ।

মিডিয়ার সঙ্গে আলাপে ট্রাম্প বলেন, “আমরা অস্ত্র সরবরাহ করছি” এবং পুরোপুরি সরবরাহ বন্ধ করা হয়নি। তিনি সাবেক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে দায়ী করেন “যুক্তরাষ্ট্রকে পুরো খালি করে ইউক্রেনকে অস্ত্র দেওয়ার” জন্য।
রাশিয়ার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, “ইউক্রেনের যুদ্ধের মূল কারণ দূর না হওয়া পর্যন্ত” অভিযান চালিয়ে যাওয়া হবে। পুতিন সম্প্রতি বলেছেন, “পুরো ইউক্রেন আমাদের”।