ভিসার মেয়াদ শেষ হলেই বিদেশি শিক্ষার্থীদের ফেরত পাঠাবে যুক্তরাজ্য

ভিসার মেয়াদ শেষ হওয়া বিদেশি শিক্ষার্থীদের বিষয়ে কঠোর পদক্ষেপের দিকে হাঁটছে ব্রিটিশ সরকার। দেশটিতে অবস্থানরত হাজার হাজার বিদেশি শিক্ষার্থীর সঙ্গে তারা সরাসরি যোগাযোগ করে সতর্ক করতে যাচ্ছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে, ভিসার মেয়াদ শেষ হলে বিদেশি শিক্ষার্থীদের যুক্তরাজ্য থেকে ফেরত পাঠানো হবে।
আজ মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদ মাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান।
গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়, বৈধভাবে ‘স্টুডেন্ট ভিসায়’ যুক্তরাজ্যে এসে পরবর্তীতে মেয়াদ শেষ হওয়ার পর তারা আশ্রয়ের জন্য আবেদন করছেন। উদ্বেগজনক হারে এমন প্রবণতা বৃদ্ধির পরিপ্রেক্ষিতে এবার প্রথমবারের মতো দেশটিতে অবস্থানরত ১ লাখ ৩০ হাজার শিক্ষার্থী ও তাদের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করে সতর্কবার্তা দিতে চাচ্ছে যুক্তরাজ্যর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। তাদেরকে সতর্ক করে বলা হবে, ভিসার মেয়াদ শেষ হলে বাধ্যতামূলকভাবে যুক্তরাজ্য ছাড়তেই হবে।
সতর্কবার্তাটিতে উল্লেখ থাকবে, যদি আপনার আশ্রয়ের আবেদনটি যুক্তিযুক্ত না হয়, তাহলে সেটি বাতিল হয়ে যাবে। আশ্রয় সহায়তার যেকোনো আবেদন দারিদ্র্য বা নিঃস্বতার মানদণ্ড অনুযায়ী যাচাই করা হবে। অর্থাৎ আবেদনকারী যদি এই মানদণ্ডে অযোগ্য বলে বিবেচিত হন, তাহলে কোনো সহায়তাও প্রদান করা হবে না। আপনার যদি অবস্থান করার মতো কোনো বৈধ অধিকার না থাকে তাহলে অবশ্যই আপনাকে যুক্তরাজ্য ছাড়তে হবে। স্বেচ্ছায় না গেলে সেক্ষেত্রে বাধ্য করা হবে।
বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজ ইউনিয়নের মহাসচিব জো গ্র্যাডি এই পদক্ষেপকে “আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের ওপর আক্রমণ” বলে আখ্যায়িত করেছেন। তার মতে, এটি যতটা ভিসা সংক্রান্ত বিষয় তারচেয়েও এটি একটি অপকৌশলের অংশ।

জো গ্র্যাডি বলেন, তাদের উচিত ছিল এমন সিদ্ধান্তের দিকে না গিয়ে বরং অর্থনৈতিকভাবে মজবুত ব্রিটেন গড়ার লক্ষ্যে বিদেশি শিক্ষার্থীর স্বাগত জানানো।
সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত এক বছরে (জুন-২৫ পর্যন্ত) ৪৩ হাজার ৬০০ জন আশ্রয়প্রার্থী ছোট নৌকায় যুক্তরাজ্যে প্রবেশ করেছেন। ঠিক একই সময়ে ৪১ হাজার ১০০ জন বৈধ ভিসায় এসেও আশ্রয়ের আবেদন করেছেন, যাদের মধ্যে বেশিরভাগই শিক্ষার্থী। গত বছর ১৬ হাজার বিদেশি শিক্ষার্থী আশ্রয়ের আবেদন করেছিলেন, যা ২০২০ সালের তুলনায় ছয় গুণ বেশি।
উল্লেখ্য, চলতি সপ্তাহে অবৈধ অভিবাসী ইস্যুতে ‘জাতীয় জরুরি অবস্থা’ ঘোষণা করার দাবিতে কনজারভেটিভ পার্টিসহ বিরোধী দলগুলোর চাপের মুখে পড়েছে সরকার।