গাজায় ইসরায়েলি হামলায় শিশু-সাংবাদিকসহ নিহত ১০৫

গাজা সিটিতে ইসরায়েলি বাহিনীর লাগাতার হামলায় আরও অন্তত ১০৫ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে শিশু, নারী, সাংবাদিক ও সাহায্যপ্রত্যাশী সাধারণ মানুষ রয়েছেন। মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) এসব হামলা চালানো হয়। খবর আল জাজিরার।
ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, কেবল আল-সাবরা এলাকায় টানা কয়েকদিন ধরে তীব্র বোমাবর্ষণে শতাধিক মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। নিহতদের মধ্যে অন্তত ৩২ জন খাদ্য ও সহায়তা সংগ্রহ করতে গিয়ে হামলার শিকার হন।
আল জাজিরার প্রতিবেদক হিন্দ খুদারি বলেন, “গাজা শহর এখন যেন এক খাঁচা, যেখানে মানুষ বেঁচে থাকার জন্য লড়ছে। আকাশ থেকে হামলা চলছে, আবার ক্ষুধায় মরছে। যে দিকেই যাচ্ছে, বোমা তাদের পিছু নিচ্ছে।”
মঙ্গলবার একদিনেই অনাহারে আরও ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। যুদ্ধ শুরুর পর থেকে ক্ষুধা ও অপুষ্টিতে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৬১ জনে। এর মধ্যে আগস্টের ২২ তারিখ থেকে দুর্ভিক্ষ নিশ্চিত হওয়ার পর ৮৩ জন মারা গেছেন।
খান ইউনিসের আল-মাওয়াসি এলাকায় পানি সংগ্রহের লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা অবস্থায় ইসরায়েলি ড্রোন হামলায় অন্তত ২১ জন নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে ৭ শিশুও ছিল। ফিলিস্তিনি সিভিল ডিফেন্সের মুখপাত্র মাহমুদ বাসাল জানান, “জীবন বাঁচাতে পানি খুঁজতে গিয়ে তারা নতুন হত্যাযজ্ঞের শিকার হলো।”
এছাড়া গাজা শহরে আল-আফ পরিবারের বাড়িতে বিমান হামলায় নারী-শিশুসহ ১০ জন নিহত হয়েছেন।
সাংবাদিকরাও টার্গেট
হামলায় আল-মানারা টিভির রাসমি সালেম ও ইমান আল-জামলি নামে দুই সাংবাদিক নিহত হয়েছেন। এতে যুদ্ধ শুরুর পর থেকে নিহত সাংবাদিকের সংখ্যা ২৭০ ছাড়িয়েছে। আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো বলছে, সাংবাদিকদের জন্য এটি ইতিহাসের সবচেয়ে প্রাণঘাতী সংঘাত।
স্থল অভিযান শুরু
ইসরায়েলি সেনাপ্রধান আইয়াল জামির নিশ্চিত করেছেন, গাজা শহরে স্থল অভিযান আরও জোরদার করা হচ্ছে। ইতোমধ্যেই হাজার হাজার রিজার্ভ সেনা ডাকা হয়েছে। ইসরায়েলি গণমাধ্যম জানিয়েছে, অন্তত ৩৬৫ সেনা কর্তৃপক্ষের ডাকে সাড়া দেননি।
অন্যদিকে কাতারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, হামাস যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব মেনে নিলেও ইসরায়েল এখনও কোনো সাড়া দেয়নি।

বেলজিয়াম মঙ্গলবার আনুষ্ঠানিকভাবে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দিয়েছে। ফিলিস্তিনি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়ে অন্য দেশগুলোকেও একই পথে এগোনোর আহ্বান জানিয়েছে।
ফিলিস্তিনি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আরও অভিযোগ করেছে, বিশ্ব সম্প্রদায়ের নীরবতা গাজার গণহত্যা, দুর্ভিক্ষ ও অর্থনৈতিক ধ্বংসযজ্ঞকে দীর্ঘায়িত করছে।