হুমকির পর ইইউর সঙ্গে বাণিজ্য আলোচনার সময়সীমা বাড়ালেন ট্রাম্প

ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) সঙ্গে চলমান বাণিজ্য আলোচনার সময়সীমা ৯ জুলাই পর্যন্ত বাড়িয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
স্থানীয় সময় রোববার (২৫ মে) ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডার লেইনের সঙ্গে এক ‘সুস্পষ্ট ফোনালাপ’-এর পর তিনি এই সিদ্ধান্ত নেন। খবর বিবিসির।
গত মাসে ট্রাম্প ইইউ থেকে আমদানি করা বেশিরভাগ পণ্যের ওপর ২০ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেন। পরে তিনি তা কমিয়ে ১০ শতাংশে নামিয়ে আনেন এবং ৮ জুলাই পর্যন্ত আলোচনার সুযোগ দেন। তবে শুক্রবার ট্রাম্প ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আলোচনায় অগ্রগতি না হলে তিনি ১ জুন থেকেই শুল্ক ৫০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়িয়ে দেবেন।
হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকদের ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, “উরসুলা আমাকে বলেছেন, আমরা দ্রুত সাক্ষাৎ করবো এবং একটি সমাধানে পৌঁছানোর চেষ্টা করব।” পরে ট্রুথ সোশ্যালে তিনি লেখেন, “সমঝোতার সময়সীমা বাড়ানো আমার জন্য একটি সৌভাগ্যের বিষয়।”
ভন ডার লেইনও বলেছেন, তিনি “দ্রুত ও কার্যকরভাবে” যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে একটি বাণিজ্য চুক্তিতে পৌঁছাতে প্রস্তুত। তবে এজন্য ইইউর প্রয়োজন ৯ জুলাই পর্যন্ত সময়, যেন তারা একটি “ভালো চুক্তি” করতে পারে।
ইইউর বাণিজ্য কমিশনার মারোশ শেফচোভিচ বলেছেন, “ইইউ পুরোপুরি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ — এমন একটি সমঝোতায় পৌঁছাতে চাই যা উভয়ের জন্য কাজ করে।”
তিনি আরও বলেন, “ইইউ-যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্য সম্পর্ক অতুলনীয় এবং তা হুমকি নয়, বরং পারস্পরিক শ্রদ্ধার ভিত্তিতে পরিচালিত হওয়া উচিত।”
ট্রাম্প দীর্ঘদিন ধরেই ইইউর সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য সম্পর্ককে ‘অন্যায্য’ বলে অভিযোগ করে আসছেন, যদিও ইইউ যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম বড় বাণিজ্যিক অংশীদার।

যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি তথ্য অনুযায়ী, গত বছর ইইউ যুক্তরাষ্ট্রে ৬০০ বিলিয়ন ডলারের বেশি পণ্য রপ্তানি করলেও আমদানি করেছে ৩৭০ বিলিয়ন ডলারের পণ্য।
বিশেষ করে ইউরোপীয় গাড়ি ও কৃষিপণ্য নিয়ে ট্রাম্পের আপত্তি রয়েছে। যদিও বছরের শুরুতে কিছু শুল্ক স্থগিত করা হয়েছিল আলোচনার সুযোগ দিতে, তবে ইইউর স্টিল ও অ্যালুমিনিয়ামের ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক এখনও বহাল রয়েছে।
ফ্রান্স ও জার্মানি আলোচনার মাধ্যমে উত্তেজনা প্রশমনের আহ্বান জানিয়েছে, কারণ শুল্ক বাড়ানো উভয় অর্থনীতির ক্ষতি করতে পারে বলে মনে করছে তারা।
ইইউও পাল্টা ব্যবস্থা নেওয়ার হুমকি দিয়েছিল। তারা যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি করা ১৮ বিলিয়ন ইউরো মূল্যের পণ্যের ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের পরিকল্পনা করেছিল, যা আপাতত স্থগিত রয়েছে।
এছাড়া ইইউ আরও ৯৫ বিলিয়ন ইউরো মূল্যের মার্কিন পণ্যের ওপর অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ নিয়ে পরামর্শ করছে।