যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবে হামাসের ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া

গাজায় ইসরায়েলের সঙ্গে ৬০ দিনের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবের প্রতি ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে হামাস। কয়েক মাস ধরে ব্যর্থ চেষ্টার পর এই ঘোষণা সংঘাত বন্ধের জন্য একটি চুক্তির পথ খুলে দিয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। খবর সিএনএনের।
হামাস এক বিবৃতিতে বলেছে, তারা মধ্যস্থতাকারীদের কাছে একটি ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া জমা দিয়েছে, এই কাঠামো বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া সম্পর্কে অবিলম্বে আলোচনার জন্য সম্পূর্ণ প্রস্তুত।
ইসরায়েল এর আগে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দেওয়া এই প্রস্তাব মেনে নিয়েছিল। এর অর্থ হলো, এখন উভয় পক্ষ চূড়ান্ত ও বিস্তারিত আলোচনায় প্রবেশ করবে বলে আশা করা হচ্ছে, যাতে একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে পৌঁছানো যায়।
হামাসের সঙ্গে সরাসরি আলোচনায় থাকা ফিলিস্তিনি-আমেরিকান মধ্যস্থতাকারী বিশারা বাহবাহ ফেসবুকে এই প্রতিক্রিয়ার প্রশংসা করে বলেছেন, আমরা এখন এই অভিশপ্ত যুদ্ধ শেষ করার অনেক কাছাকাছি। তিনি জানান, হামাস কিছু প্রয়োজনীয় বলে মনে করা সংশোধনী দিয়েছে। বাহবাহ আশাবাদী, এই সংশোধনীগুলো আগামী সপ্তাহের মধ্যে যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে পৌঁছাতে বাধা দেবে না।

বিষয়টির সঙ্গে পরিচিত একটি ইসরায়েলি সূত্র শুক্রবারের শুরুতে জানিয়েছিল, ইসরায়েল হামাসের কাছ থেকে ইতিবাচক সাড়া আশা করছিল, যদিও প্রস্তাবের ভাষায় কয়েকটি বিষয় পুনরায় লেখার প্রয়োজন হতে পারে। সূত্রটি আরও জানায়, এই পরিবর্তনগুলো যুদ্ধবিরতি প্রচেষ্টাকে ব্যাহত করবে বলে আশা করা হচ্ছে না।
গাজায় অবশিষ্ট ৫০ জন ইসরায়েলি বন্দির মধ্যে এই প্রস্তাবে যুদ্ধবিরতি চলাকালীন ১০ জন জীবিত বন্দি ও ১৮ জন নিহত বন্দির দেহাবশেষ মুক্তির আহ্বান জানানো হয়েছে। যুদ্ধবিরতির প্রথম দিনে হামাস অনির্দিষ্ট সংখ্যক ফিলিস্তিনি বন্দি ও আটককৃতদের বিনিময়ে আটজন জীবিত ইসরায়েলি বন্দিকে মুক্তি দেবে। এরপর, ইসরায়েল উত্তর গাজার কিছু অংশ থেকে তাদের সেনা সরিয়ে নেবে, উভয় পক্ষ স্থায়ী যুদ্ধবিরতির জন্য আলোচনা শুরু করবে।
হামাসের পক্ষ থেকে কোনো ধরনের আনুষ্ঠানিকতা বা বাড়তি আয়োজন ছাড়াই বন্দিদের মুক্তি দেওয়া হবে। প্রস্তাবে উল্লেখিত আরও চারটি তারিখে বাকি বন্দিদের মুক্তি দেওয়া হবে।
নতুন প্রস্তাবের আশ্বাস ও ট্রাম্পের ভূমিকা
একজন ইসরায়েলি কর্মকর্তা ও আলোচনার সঙ্গে পরিচিত সূত্রের মতে, নতুন প্রস্তাবে ৬০ দিনের যুদ্ধবিরতির সময় অথবা সম্ভাব্য পরবর্তীতে স্থায়ী যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে পৌঁছানোর জন্য ইসরায়েলকে আলোচনার টেবিলে রাখতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আরও দৃঢ় আশ্বাস রয়েছে।
এটি ইসরায়েলকে বিতর্কিত ইসরায়েলি-সমর্থিত গাজা মানবিক ফাউন্ডেশনের পরিবর্তে ঐতিহ্যবাহী মানবিক চ্যানেলগুলোর মাধ্যমে গাজায় সাহায্য বাড়ানোর প্রতিশ্রুতিও দেয়।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যুদ্ধবিরতির জন্য জোর দিয়ে বলেছেন, ইসরায়েল ৬০ দিনের যুদ্ধবিরতির একটি চুক্তি চূড়ান্ত করার জন্য প্রয়োজনীয় শর্তে সম্মত হয়েছে। ট্রুথ সোশ্যাল-এ একটি পোস্টে ট্রাম্প হামাসকেও প্রস্তাবটি গ্রহণ করার জন্য সতর্ক করেছেন। তিনি বলেন, আমি আশা করি, মধ্যপ্রাচ্যের ভালোর জন্য হামাস এই চুক্তিটি গ্রহণ করবে, কারণ এটি এর চেয়ে ভালো হবে না- এটি কেবল আরও খারাপ হবে। তিনি প্রস্তাবটি এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে কাতার ও মিশরকে তাদের ভূমিকার জন্য ধন্যবাদ জানান।