নাইজেরিয়ায় ভয়াবহ বন্যায় নিহত ১১৫, নিখোঁজ বহু

নাইজেরিয়ার উত্তর-মধ্যাঞ্চলের নাইজার স্টেটের মোকওয়া শহরে ভারী বর্ষণে সৃষ্ট বন্যায় অন্তত ১১৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। বন্যার কারণে হাজার হাজার ঘরবাড়ি ধ্বংস হয়েছে এবং এখনও অনেকে নিখোঁজ রয়েছেন বলে জানিয়েছে দেশটির জরুরি ব্যবস্থাপনা সংস্থা। খবর আল জাজিরার।
নাইজার স্টেটের রাজধানী মিনার অপারেশন অফিসের প্রধান হুসেইনি ইসা শুক্রবার (৩০ মে) জানান, এখনও অনেক মানুষ বিপদের মধ্যে রয়েছেন এবং মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।
নাইজার স্টেট ইমার্জেন্সি ম্যানেজমেন্ট এজেন্সির (এসইএমএ) মুখপাত্র ইব্রাহিম আওদু হুসেইনি এএফপিকে বলেন, “আমরা এখন পর্যন্ত ১১৫টি মরদেহ উদ্ধার করেছি। তবে নদীর গতিপথে আরও মরদেহ ভেসে আসছে, তাই সংখ্যা বাড়বে বলেই আশঙ্কা।”
স্থানীয় সময় গত বুধবার (২৮ মে) রাতে কয়েক ঘণ্টা ধরে টানা ভারী বর্ষণের ফলে মোকওয়া শহরের বহু ঘরবাড়ি পানিতে তলিয়ে যায়। নিকটবর্তী এক শহরে বাঁধ ভেঙে যাওয়ায় পরিস্থিতি দ্রুত খারাপের দিকে যায়।
আল জাজিরার আবুজা প্রতিনিধি আহমেদ ইদ্রিস জানান, “প্রতি বর্ষায় এই ধরনের দুর্যোগ ঘটছে। নদীর তীরে বা নিচু এলাকায় বসবাসকারীদের উচ্চভূমিতে সরে যেতে নিয়মিত সতর্কতা দেওয়া হয়। কিন্তু তারপরও বহু প্রাণহানি এবং সম্পদহানি অব্যাহত রয়েছে।”
তিনি আরও বলেন, “সঠিক নালা বা ড্রেনেজ না থাকার কারণে অনেক এলাকায় পানি সহজে নামতে পারে না। আর অনেক সময় রাজ্য পর্যায়ের জরুরি সংস্থাগুলো প্রস্তুত থাকলেও এমন দুর্ঘটনা তাদের জন্যও বিস্ময়ের।”
মোকওয়া শহরের বাসিন্দা, সরকারি কর্মচারী মোহাম্মদ টাঙ্কো বলেন, “আমার ছোটবেলার অন্তত ১৫ জন মারা গেছেন। সবকিছু হারিয়েছি।”
৩৫ বছর বয়সী জেলে দাঞ্জুমা শাবা বলেন, “আমার ঘর ভেঙে পড়েছে, এখন পার্কিংয়ে গাড়ির ভেতরে রাত কাটাচ্ছি।”
নাইজেরিয়ার আবহাওয়া অধিদপ্তর ইতোমধ্যেই জানিয়েছে, চলতি সপ্তাহে দেশটির ৩৬টির মধ্যে ১৫টি রাজ্যে আকস্মিক বন্যার আশঙ্কা রয়েছে, যার মধ্যে নাইজার স্টেটও রয়েছে। অথচ এখন বন্যা মৌসুমের শুরু মাত্র। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ এবং ঘনত্ব আরও বাড়ছে।

২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরে উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় মাইদুগুরি শহরে প্রবল বৃষ্টিপাত ও বাঁধ ভেঙে যাওয়ায় অন্তত ৩০ জন নিহত এবং লাখো মানুষ গৃহহীন হন। আর গত বছর দেশের ৩১টি রাজ্যে বন্যায় এক হাজার ২০০ জনেরও বেশি নিহত ও ১২ লাখের বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হন।