দিল্লিতে ভূমিকম্প : দীর্ঘ কম্পনের দাবি বাসিন্দাদের

হরিয়ানার ঝাজ্জর জেলায় ৪ দশমিক ৪ মাত্রার ভূমিকম্প আঘাত হানার পর এবার দিল্লি ও জাতীয় রাজধানী অঞ্চলের (এনসিআর) অন্যান্য অংশে তীব্র কম্পন অনুভূত হয়েছে। দেশটির ভূকম্পবিদ্যা ইনস্টিটিউট জানিয়েছে, রিখটার স্কেলে ৪ দশমিক ৪ তীব্রতার এই ভূমিকম্পের গভীরতা ছিল ১০ কিলোমিটার। খবর এনডিটিভির।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেকেই লিখেছেন, এটি ছিল তাদের ‘জীবনের দীর্ঘতম’ ভূমিকম্পের অভিজ্ঞতা, যা কম্পনের দীর্ঘস্থায়ীত্ব তুলে ধরে।
আজ বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) সকাল ৯টা ৪ মিনিটে ভূমিকম্প অনুভূত হওয়ার পর পাখা ও অন্যান্য গৃহস্থালির জিনিসপত্র দুলতে থাকায় দিল্লির বেশ কয়েকটি এলাকার বাসিন্দারা দ্রুত তাদের ঘর থেকে বেরিয়ে আসেন। নয়ডা ও গুরুগ্রামের অফিস এলাকাতেও কম্পন অনুভূত হয়, কম্পিউটার সিস্টেম কেঁপে ওঠে। অনেক পেশাদার অফিস ছেড়ে বাইরে চলে আসেন।
হরিয়ানায়, গুরুগ্রাম, রোহতক, দাদরি ও বাহাদুরগড়েও কম্পন অনুভূত হয়েছে। ঝাজ্জরের কেন্দ্রস্থল থেকে প্রায় ২০০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত পশ্চিম উত্তর প্রদেশের মীরাট ও শামলি পর্যন্তও এই কম্পন ছড়িয়ে পড়ে।
ভূমিকম্প আঘাত হানার সঙ্গে সঙ্গেই জাতীয় দুর্যোগ প্রতিক্রিয়া বাহিনী (এনডিআরএফ) একটি পরামর্শ জারি করে। এতে লোকজনকে আতঙ্কিত না হয়ে বাইরে খোলা জায়গায় অবস্থানের জন্য অনুরোধ করা হয়।
দিল্লিতে ভূমিকম্প হওয়াটা কোনো অস্বাভাবিক ঘটনা নয়, এর মূল কারণ হলো এখানকার ভৌগোলিক অবস্থান। দিল্লি দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ (ডিডিএমএ) জানায়, হিমালয়সহ উত্তর ভারতে ভূমিকম্পগুলো মূলত ভারতীয় টেকটোনিক প্লেট ও ইউরেশিয়ান প্লেটের সংঘর্ষের কারণে হয়। যখন এই প্লেটগুলো একে অপরের সঙ্গে ধাক্কা খায়, তখন এগুলো স্প্রিংয়ের মতো শক্তি জমা করে। এক সময় সেই জমে থাকা শক্তি যখন হঠাৎ করে বের হয়ে আসে, তখনই ভূমিকম্প হয়।
দিল্লি সিসমিক জোন ৪-এর অন্তর্ভুক্ত, যার মানে এটি ভূমিকম্পের জন্য বেশ ঝুঁকিপূর্ণ একটি এলাকা। এ ছাড়াও, দিল্লি-হরিদ্বার রিজ, সোহনা ফল্ট, দিল্লি-মোরাদাবাদ ফল্ট ও মহেন্দ্রগড়-দেরাদুন ফল্টসহ বেশ কয়েকটি সক্রিয় চ্যুতিরেখার (ফল্ট লাইন) কাছাকাছি অবস্থিত। বিভিন্ন প্রতিবেদন অনুযায়ী, ১৭২০ সাল থেকে এ পর্যন্ত দিল্লিতে রিখটার স্কেলে ৫ দশমিক ৫ বা তার বেশি মাত্রার অন্তত পাঁচটি ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে।